আজ থেকে৩৭ বছর আগেই ১৯৮৫ সালের ২২ জুলাই প্রয়াত হয়েছেন বাংলার অন্যতম প্রতিভাবান অভিনেত্রী মহুয়া রায়চৌধুরী (Mohua Roychwdhury)। কিংবদন্তি পরিচালক তরুণ মজুমদার এবং অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়ের কোন সন্তান ছিল না। তাই অভিনেত্রী মহুয়া রায়চৌধুরী এবং দেবশ্রী রায় (Deboshree Roy) কেই তারা নিজের মেয়ের মতোই দেখতেন। সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে সিনেমার মতোই বাস্তবেও কিন্তু দুই বোন ছিলেন মহুয়া এবং দেবশ্রী।
প্রসঙ্গত মহুয়ার প্রথম অভিনয়ে আসা তরুণ মজুমদারের সিনেমা ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’ দিয়ে। নিজের অভিনয় প্রতিভা দিয়েই প্রথম সিনেমাতেই নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন অভিনেত্রী। তাই তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। প্রথম সিনেমা শ্রীমান পৃথ্বীরাজ এর পরেই মহুয়া অভিনয় করেছিলেন ‘দাদার কীর্তি’তে। এই সিনেমাতে তার সাথেই দেখা গিয়েছিল দেবশ্রী রায় এবং সন্ধ্যা রায় আর তাপস পাল কেও।
এছাড়াও পরবর্তীতে আরো বেশ কয়েকটি সিনেমায় দুই বোনের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন দেবশ্রী আর মহুয়া। পরবর্তীতে ‘সুবর্ণ গোলক’ ছবিতেও আবার তারা দুই বোন হয়েছিলেন। বয়সে মহুয়া ছিলেন দেবশ্রী রায়ের থেকে বড়। সিনেমায় আসার আগেই অনেক ছোট থেকেই দেবশ্রী চিনতেন মহুয়াকে। তার ডাকনাম ছিল শিপ্রা আর পোশাকি নাম ছিল সোনালী রায় চৌধুরী। তবে প্রথম সিনেমার পরেই তরুণ মজুমদার তার নাম পাল্টে দিয়ে রেখেছিলেন মহুয়া।
গতকাল ছিল অভিনেত্রীর প্রয়াণ দিবস। তাই এই অভিশপ্ত দিনে আনন্দবাজার অনলাইনে কলম ধরেছিলেন অভিনেত্রী দেবশ্রী রায়। সেখানে তিনি জানিয়েছেন মহুয়া ছিলেন বেশ মেজাজি। কারণ দেবশ্রীর কথায় সেটে কখনো তিনি হাসিখুশি থাকতেন আবার হঠাৎ করেই তিনি খুব রেগে যেতেন। আর রেগে গেলে নাকি তার মুখে যা আসতো তাই বলে দিতেন তিনি। কিন্তু মাথা ঠান্ডা হলেই নাকি সব ঠিক হয়ে যেত। তাই এসব দেখে দেবশ্রীর মনে হয়েছিল বিবাহিত জীবনে সম্ভবত সুখী ছিলেন না অভিনেত্রী।
আগেই বলেছি দেবশ্রী ছিলেন মহুয়ার থেকে বয়সে অনেকটাই ছোট। তাই তাদের মধ্যে কথা খুবই কম হতো। বরং দেবশ্রীর মায়ের সাথেই বেশি কথা বলতেন মহুয়া। তার কাছেই তিনি জানিয়েছিলেন তিলক চক্রবর্তী সাথে পালিয়ে বিয়ে করেছিলেন তিনি। দেবশ্রী জানিয়েছেন এই তিলক চক্রবর্তী মঞ্চে কিশোর কুমারের গান গাইতেন। তাদের বিয়ের পর মহুয়ার কোল আলো করে আসে তাঁর ছেলে গোলা। এই ছেলে অন্ত প্রাণ ছিলেন মহুয়া। তিনি স্টুডিওতে এসেও সারাক্ষণ ছেলের গল্পই করতেন।
তবে দেবশ্রী জানিয়েছেন তার সাথে মহুয়ার একটা বিষয়ে বেশ মিল আছে। তার মতই ভীষণ পশুপ্রেমি ছিলেন মহুয়া। তাই শুটিংয়ে এসে প্রথমেই তিনি নিজে হাতে খাওয়াতেন স্টুডিও পাড়ার কুকুরদের। ভালবাসতেন বাচ্চাদের। বাচ্চা দেখলেই তাই সব ভুলে তাদের সাথে খেলতে ব্যস্ত হয়ে পড়তে অভিনেত্রী। সম্ভবত সব বাচ্চাদের মধ্যে নিজের ছেলেকেই সবসময় খুঁজতেন তিনি। প্রসঙ্গত এত বছর পরেও মহুয়া রায়চৌধুরীর মৃত্যু আজও রহস্যজনক। দেবশরের কথায় কী করে গায়ে আগুন লাগল? পুড়ে গিয়েছিলেন, না কি অন্য কিছু? সব উত্তর অজানা রেখেইবড্ড অসময়ে চলে গিয়েছিলেন মহুয়া