একে একে চলে যাচ্ছেন বাংলা বিনোদন জগতের নক্ষত্ররা। সম্প্রতি প্রয়াত হয়েছেন বিখ্যাত বাঙালি পরিচালক তরুণ মজুমদার (Tarun Majumdar)। ‘দাদার কীর্তি’, ‘আলো’, ‘চাঁদের বাড়ি’, ‘বালিকা বধূ’ ইত্যাদির মত একাধিক ছবি উপহার দিয়েছে তিনি দর্শকদের। কাজের জন্যই পেয়েছিলেন খ্যাতি। তবে আসল জীবনে নিঃসন্তান ছিলেন তরুণ মজুমদার। তবে দেবশ্রী রায় (Debashree Roy) সহ মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় ও মহুয়া রায়চৌধুরীকে নিজের মেয়ের মতোই মত করেছেন তিনি।
পরিচালক মারা যাওয়ার আগেই নিজের শেষ ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন মারা যাওয়ার পর তিন মানসকন্যা মৌসুমী, মহুয়া ও দেবশ্রী যেন তাঁর পরলৌকিক ক্রিয়া করে। পরিচালকের শেষ ইচ্ছা পূরণে এদিন হাজির হয়েছিলেন দেবশ্রী রায়। শরীর অসুস্থ থাকলেও বাবার মত পরিচালকের শেষ ইচ্ছা যে পূরণ করতেই হবে।
আসলে তরুণ মজুমদারের মৃত্যুর খবর পাওয়া মাত্রই ছুটে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী। এরপর তাকে শেষ দেখা দেখে এসে ঠান্ডা জল দিয়েই স্নান করেছিলেন। সেই থেকেই ঠান্ডা লেগে জ্বর-সর্দি হয়ে গিয়েছে অভিনেত্রীর। তবে অসুস্থতা সত্ত্বেও শুক্রবার তরুণ মজুমদারের পরলৌকিক ক্রিয়াতে দেখা গেল তাকে।
এর আগে ৪ই জুলাই তরুণ মজুমদারের প্রয়াণের দিনেই অভিনেত্রী জানান, তিনি আমার বাবার মত ছিলেন। শুধু বাবার মত নয় ছিলেন শিক্ষাগুরুও। তাই পরিচালকের শেষ ইচ্ছাপূরণ করা তাঁর কর্তব্যের মধ্যেই পরে। দেবশ্রী জানান, শুক্রবার আমার বাড়ির কাছেই একটা মন্দিরে আমার সিনেমার জগতের বাবার শেষ ইচ্ছাপূরণ করব, পরলৌকিক কাজ করে। এটাই হবে তাঁকে দেওয়া আমার গুরুদক্ষিণা।’
তরুণ মজুমদারের ছবি ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’ দিয়েই অভিনয়ে এসেছিলেন দেবশ্রী রায়। এদিন অভিনেত্রী বাড়ির পাশে পূর্ণদাস রায় রোডের ডাকাত কালী মন্দিরে তরুণ মজুমদারের পরলৌকিক ক্রিয়ার আয়োজন করেন। সাথে রয়েছেন অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিনেত্রী জানান, ‘বাড়ির একেবারে পাশেই এই মন্দিরে ভিড় ভাট্টা নেই। আমরা তো পরিচালকের সন্তানের মতোই ছিলাম, তাই এখানে শান্তিতে পুজো করে ওনার আত্মার চিরশান্তি কামনা করতে পারব।’
প্রসঙ্গত, ৪ই যে জুলাই সকাল ১১টা বেজে ১৭ মিনিটে এস এস কে এম হাসপাতালে শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেন পরিচালক। মৃত্যুকালীন বয়স হয়েচিল ৯১ বছর, কিডনির সমস্যা,শ্বাসকষ্ট, দিয়াবেটিস সহ একাধিক রোগে ভুগছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে যে একটা অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল সেটা বোঝাই যাচ্ছে। তবে তাঁর তৈরী সিনেমার মধ্যে দিয়েই তিনি আজীবন বেঁচে থাকবেন রুচিশীল দর্শকদের মনে।