সব মিলিয়ে সারা বিশ্বেই কমবেশি শুরু হয়েছে করোনা (Corona Virus) টিকাকরণ কর্মসূচি। যদিও এরই মাঝে করোনার জিনসজ্জায় বদলের ফলে আগের থেকেও অনেক বেশি সংক্রামক হয়েছে কোভিড। পাশাপাশি কোমরবিডিটিও বেড়েছে, বেড়েছে গনোরিয়ার মত অন্যান্য রোগের প্রকোপ। করোনার ফলে উদ্ভূত নিত্যনতুন শারীরিক সমস্যার তালিকায় সম্প্রতি সংযুক্ত হল পুরুষদের যৌন সমস্যা। এক আন্তর্জাতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, করোনার ফলে পুরুষদের যৌনাঙ্গে জ্বলনের মত সমস্যা দেখা যাচ্ছে, পাশাপাশি দেহরসে কমছে শুক্রাণুর সংখ্যা।
এদিকে আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সারাবিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১০.২ কোটি। এরই মাঝে পুংজনন ( male fertility) ক্ষমতায় করোনার প্রভাবে রীতিমত চিন্তিত বিশেষজ্ঞরা। যদিও এ বিষয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজনের কথা জানিয়েছেন করোনাবিদরা। শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করে ফুসফুস, কিডনি, অন্ত্রাশয় ও হৃদয়ের পাশাপাশি যৌন ক্ষমতাকেও যে প্রভাবিত করার ক্ষমতা রাখে করোনাভাইরাস, সে কথা জেনে যথেষ্ট আতঙ্কিত বিশ্ববাসী।
আন্তর্জাতিক সমীক্ষকদের মতে, ফুসফুসের কোষের সঙ্গে যে পদ্ধতিতে করোনাভাইরাস সংযুক্ত হয়, সেই একই পদ্ধতির দেখা মিলছে পুংযৌনাঙ্গেও। জাস্টাস-লাইবিগ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেহজাদ হাজিজাদেহ মালেকী ও বখতিয়ার তারতিবিয়ানের গবেষণায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। এই ক্ষেত্রে ১০ দিনের ব্যবধানে মোট ৬ বার ৮৪ জন করোনা আক্রান্ত পুরুষের উপর গবেষণা চালানো হয় এবং প্রাপ্ত তথ্যকে ১০৫ জন সুস্থ পুরুষের তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয় বলেওে জানা যাচ্ছে।
করোনার কারণে শরীরে যে রাসায়নিক টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, তার জেরে ডিএনএ ও প্রোটিন কোষের ক্ষতি হতে পারে, এমনই মত মালেকীর। মালেকী আরও জানান, “রাসায়নিক ডামাডোলের কারণে পুংজনন ক্ষমতায় ভাঁটা দেখা গেলেও সময়ের সাথে সাথে তা আবার পূর্ব-পরিস্থিতিতে ফিরবে।” গবেষকদের মতে, দেহে করোনা প্রবেশের পথ হিসেবে যেভাবে পুংযৌনাঙ্গের দিকে ইশারা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, তাতে আরও সাবধান থাকতে হবে পুরুষ প্রজাতিকে।
বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ বা পুংযৌনক্ষমতায় দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির মত ঘটনা না দেখা যাওয়ায় এখনই এহেন গবেষণাকে সম্পূর্ণ বিশ্বাসে নারাজ ব্রিটেনের কেয়ার জনন কেন্দ্রের অধিকর্তা অ্যালিসন ক্যাম্পবেল। তাঁর মতে, অধিক পরিমাণে ওষুধ ও অ্যান্টিবায়োটিকের কারণে সাময়িকভাবে জননক্ষমতা কমতে পারে করোনা আক্রান্ত পুরুষদের। যদিও এই সমীক্ষার ফলাফলকে প্রকাশের আগে আরও গবেষণার প্রয়োজনের কথা জানিয়েছেন শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পুংজনন ঔষধ বিভাগের বিশেষজ্ঞ অ্যালান পেসি।