কমেডি কুইন ভারতী সিংকে (Bharti Singh) কে না চেনেন। নিজের প্রতিভার জোরে লোক হাসিয়েই দেশজোড়া খ্যাতি অর্জন করেছেন তিনি। তাঁর সেন্স অফ হিউমারের তারিফ করেন সকলে। মুখে সারাক্ষণ হাসি লেগে থাকলেও এই লাফটার কুইনের মনের কিন্তু লুকিয়ে রয়েছে অনেক অজানা কষ্ট। আজ কমেডিয়ান হিসেবে দেশজোড়া নাম-যশ-খ্যাতির পাশাপাশি টাকা-পয়সা কোনো কিছুরই অভাব নেই তাঁর।
তবে ভারতীর জীবনে এই সাফল্য কিন্তু রাতারাতি আসেনি। সম্প্রতি বলিউড অভিনেত্রী নীনা গুপ্তার সাথে এক সাক্ষাৎকারে ভারতীর মুখেই উঠে এসেছে তার পুরনো জীবনের অজানা কাহিনী। বরাবরই স্পষ্ট বক্তা হিসেবেই পরিচিত এই কমেডি কুইন। তাই মনের কথাই মুখে থাকে তাঁর। প্রসঙ্গত বিরাট সাফল্যের জোরে আজ তিনি বিলাসবহুল জীবন কাটালেও একসময় তাঁর ছোটবেলাটা কেটেছে অনেক কষ্ট এবং দারিদ্র্যের মধ্যে দিয়ে।
দারিদ্র কি জিনিস তার সাক্ষী থেকেছেন ভারতী নিজে। তবে অতীতের সেই দারিদ্রতা নিয়ে কখনোই কোন আড়াল রাখেননি এই কৌতুক অভিনেত্রী। বরং অতীত জীবন নিয়ে বরাবরই গর্ববোধ করেন তিনি। যা শুনলে চোখে জল চলে আসবে যা কারও। ভারতী জানান মাত্র ২ বছর বয়সে তিনি তাঁর বাবাকে হারিয়েছেন। সে সময় অভাবের সংসার চালাতে লোকের বাড়ি কাজ করতেন তাঁর মা।
তাই ছোট থেকেই ভারতী এবং তাঁর দিদি দাদারা সকলের ফেলে দেওয়া এঁটো খাবার খেয়েই বড় হয়েছেন।সেসময় অর্থেই অভাবে তাঁদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ভাইবোনরা সবাই ফ্যাক্টরিতে কাজ করতেন। দিওয়ালিতে অন্য বাচ্চারা যখন বাজি ফাটাতো তখন সেদিনের ছোট্ট ভারতী নাকি তাদের কাছে গিয়ে এই আশায় দাঁড়িয়ে থাকতেন যে তিনিও কখনও বাজি ফাটাবেন।
কমেডিয়ানের কথায় ‘আমার মা যখন লোকের বাড়িতে কাজ করত আমি দরজায় বসে থাকতাম। বাথরুম পরিষ্কার করত মা। ফেলে দেওয়া,বেঁচে যাওয়া খাবার নিয়ে আসতো মা যে বাড়িতে কাজ করতো সেখান থেকে। ওদের কাছে খারাপ খাবারটা আমাদের কাছে অমৃত হয়ে উঠতো’। তাই ভারতী যখনই কাউকে খাবার নষ্ট করতে দেখেন কিংবা রাস্তাঘাটে কোন আধ খাওয়া আপেল পরে থাকতে দেখেন তখন তা দেখে প্রচন্ড রাগ হয় তাঁর।
কেউ আধ খাওয়া আপেল ফেলে দিলে ভারতীর মনে মনে বলেন ‘লোকটার খারাপ হোক’। এমনকি এত বড় একজন শিল্পী হয়েও ভারতী মনে করেন ওই ফেলে দেওয়া খাবার নষ্ট না করে তিনি যদি নিজে খেয়ে নিতেন তাহলে অন্তত তা অপচয় হতো না। তিনি ছোটবেলাতেই এতটাই দারিদ্র দেখেছেন যে, সে প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এদিন কমেডিয়ান বলেন ‘আমি জীবনে কতটা দারিদ্র দেখেছি তা বলে বোঝাতে পারবো না’। ভারতীর কথায় ‘ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করলে বোঝা যাবে বেশিরভাগ কৌতুকশিল্পীই কিন্তু একসময় গরিব ছিলেন। ভরা পেটে হয়তো রসিকতা করা যায় না’।