শতরূপা সান্যাল (Shatarupa Sanyal) মানেই বরাবরই স্রোতের বিপরীতে হেঁটে চলা এক আধুনিক মনের মানুষ। তাঁর দেওয়া সেই বড়ো হয়েছেন তার দুই মেয়ে তথা অভিনেত্রী চিত্রাঙ্গদা চক্রবর্তী (Chitrangada Chakraborty) এবং অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী (Ritabhari Chakraborty)। তাই ছোট থেকেই ভাইফোঁটার দিনে নিজের ভাই বা দাদা না থাকার আক্ষেপ নিয়ে নয় বরং আজকের এই বিশেষ দিনটিকে বোনফোঁটা (Bonfonta) বলেই উদযাপন করে এসেছেন দুই সুন্দরী অভিনেত্রী।
তবে কর্মসূত্রে বহুদিন আলাদা শহরে থেকেছেন দুই বোন। তাই ইচ্ছা থাকলেও একসাথে হওয়ার অভাবে বোন ফোঁটা মিস করেছেন বহুবছর। কিন্তু এবছরটা আলাদা। দীর্ঘদিন পর আজকের এই বিশেষ ফের একসাথে হয়েছেন দুই বোন। তাই এই সুযোগ আর হাতছাড়া করার কোনও চান্সই নেননি তারা। হারানো ছোটোবেলায় সেই স্বাদ ফের একবার ফিরে পেতে আজকের দিনে ছোটোবেলার মতোই বোন ফোঁটায় মেতেছিলেন চিত্রাঙ্গদা আর ঋতাভরী।
তাই আজ সকাল থেকেই চক্রবর্তী বাড়িতে শুরু হয়েছিল বোনফোঁটার তোড়জোড়। ভাইফোঁটা দেওয়ার মতোই সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে নতুন জামাকাপড় পরে একে অপরের মুখোমুখি বসেছিলেন দুই বোন।পাশে রাখা থালায় সাজানো হয়েছিল প্রদীপ, ঘি, মিষ্টি। আর এদিন ফিরে পাওয়া ছোটবেলার একগুচ্ছ ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন চিত্রাঙ্গদা।
ছবি শেয়ার করার পাশাপাশি অভিনেত্রী জানিয়েছেন, তাদের এই বোনফোঁটা দেওয়ার রীতি আজকের নয়,যখন তাঁরা স্কুলে পড়তেন, সেইসময়কার। তখন থেকেই তাদের থেকেই বাড়িতে ভাইফোঁটার সকালে এভাবেই বোনফোঁটার আয়োজন করা হত। সেইসাথে চিত্রাঙ্গদা লিখেছেন, ‘মা এবং দিদিমার কারণে ছোট থেকেই আমি আর ও বোনফোঁটা দিই। বহু বছর ধরে আমরা দুজন দুটো আলাদা শহরে। অত্যন্ত ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে দিন কাটাই। এবার কোনও মতে দুজনে সময় বের করতে পেরেছি। মায়ের উপস্থিতিতে আবারও তাই বোনফোঁটা!’
এই পোস্টের সাথেই মা তথা জনপ্রিয় পরিচালক শতরূপা সান্যালের একটি মিষ্টি কবিতা জুড়ে দিয়েছেন চিত্রাঙ্গদা। জানিয়েছেন, ২০০১ সালে বোনফোঁটায় মায়ের তরফে তাঁরা দুই বোন এটি উপহার পেয়েছিলেন। তখন তাদের একজনের বয়স ছিল ৯ আর একজনের বয়স ছিল ১২। দই অভিনেত্রীর উপহারে পাওয়া মিষ্টি ছড়াটি সম্পূর্ণ তুলে দেওয়া হল –
‘আজ আমাদের বোন ফোঁটা
দেখবে এসো কান্ডটা।
থালায় রেখে গঙ্গা জল,
অন্য থালায় মিষ্টি, ফল।
বরণ ডালায় জ্বলছে দীপ,
পরাচ্ছি চন্দনের টিপ।
সামনে বসে ছোট্ট বোন,
ধৈর্য্য ধরে অনেকক্ষণ,
আর পারেনা সামলাতে,
মিষ্টি তুলে নেয়ে হাতে।
নিচ্ছে ফোঁটা, চলছে মুখ।
প্রাণের মধ্যে কতই সুখ।।’