ভারত হল এমন এক দেশ যেখানে বহুমূল্যবান রত্ন থেকে শুরু করে ঔষধি সবকিছুই পাওয়া যায়। আর ভারতেই পাওয়া যায় বহুমূল্যবান কিছু গাছ গাছড়া থেকে শুরু করে অদ্ভুত সমস্ত প্রাণী থেকে শুরু করে কীট পতঙ্গ। এমন অনেক গাছ রয়েছে যেগুলি অন্তর্রাষ্ট্রীয় বাজারে ব্যাপক চাহিদা ও ভীষণ দামে বিক্রি হয়। এই মূল্যবান হবার তালিকায় নাম রয়েছে পাহাড়ের একটি কীটের (Worm) যাওয়ার দাম প্রায় ২০ লক্ষ টাকা প্রতি কেজি। অর্থাৎ ১ টি পোকাও যদি পান তাহলে ২০০০ টাকা পর্যন্ত দাম পেতে পারেন।
এখন হয়তো অনেকেই ভাবছেন কি এমন পোকা যার দাম এতো টাকা! আসলে এটি হল এক ধরণের বিশেষ ধরণের ছত্রাক (Fungus)। এই ছত্রাকটির বৈজ্ঞানিক নাম হল ‘Ophiocardiceps sinensis’ ও ডাক নাম হল ‘ক্যাটারপিলার ফাঙ্গাস (Caterpillar Fungus)’ যা ভারতে ‘পোকা গোষ্ঠী’ নাম চেনেন অনেকে। এই কীট বা পোকাটি বাদামি বর্ণের দেখতে হয়। মূলত হিমালয় এর পাহাড়ি এলাকায় ৩৫০০ থেকে ৫০০০ মিটার উচ্চতায় এই কীট পাওয়া যায়। ভারত ছাড়াও নেপাল চীন, ভুটান ও তিব্বতেও এই কীট পাওয়া যায়।
এই পোকাটির মূল চাহিদার কারণ হল এই পোকাঁদিয়ে তৈরী হয় এক ধরণের ভায়াগ্রা। যেটির নাম হল ‘হিমালয়ান ভায়াগ্রা (Himalayan Viagra)’। এই যৌন শক্তি ও উত্তেজনা বর্ধক হিসাবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এই কারণেই এই কীটের খোঁজেই লেগে থাকেন অনেকে। বলতে গেলে নিজেদের জীবিকা হিসাবে কিছু মানুষ বেছে নিয়েছেন এই ‘ক্যাটারপিলার ফাঙ্গাস’। প্রতিবছর শিরের পর তুষারপাত কমলেই এলাকার কিছু মানুষ এই পোকার খোঁজে বেরিয়ে পড়েন। পোকা সংগ্রহ করে বাজারে বড় ব্যবসায়ীদের কাছে তা বিক্রি করা হয়।
যেমনটা জানা যায়, প্রতিবছর এই পোকা রপ্তানি করেই কয়েকশো কোটি টাকার ব্যবসা হয়। তবে যেমনটা জানা যাচ্ছে এই বিরল প্রজাতির পোকাগুলি বর্তমানে লুপ্তপ্রায়। তাই এই পোকা ধরা ও বিক্রি একেবারেই বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এতে থেমে যায়নি চোরা চালান। কীটপতঙ্গগুলি থেকেই পাহাড়ের গায়ে গজিয়ে ওঠা গাছ থেকে একপ্রকার রস বেরিয়ে আসে। এই রস দিয়েই তৈরী হয় ভীষণ কার্যকরী এক ভায়াগ্রা। এছাড়াও কিছু ক্রীড়াবিদ ও স্টেরয়েড ব্যবহারকারীরাও এই জিনিসটি ব্যবহার করেন।