আজকালকার দিনে জনপ্রিয় কে না হতে চায়? একটু নাম কমাতে সকলেই চায়, আর বর্তমান সময়ে ইন্টারনেটের দৌলতে সেটা অনেকটাই সহজ হয়ে গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে অনেকেই ভাইরাল হয়ে রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে পড়েছেন। উদাহরণ স্বরূপ রানু মন্ডল থেকে ভুবন বাদ্যকরকেই ধরে নেওয়া যায়। বিষেধ করে ভুবনবাবুকে দেখে অনেকেই গান বানিয়ে ভাইরাল প্রচেষ্টা করেছেন, অনেকে সফলও হয়েছেন। এমনই একজন হলেন বর্ধমানের মাছ বিক্রেতা কুশল বাদ্যকর (Kushal Badyakar)।
বর্ধমানের দুর্গাপুরের শোভাপুর এলাকার বাসিন্দা কুশলবাবু। মাছ বিক্রি করেই তার সংসার চলে। তবে মাছ বিক্রির পাশাপাশি গানের চর্চাও করেন তিনি, ছোট থেকেই গানের প্রতি বেশ আকর্ষণ রয়েছে। বিক্রি বাড়ানোর জন্য ‘কাঁচা বাদাম’ এর সুরেই মাছ নিয়ে গান বেঁধেছিলেন তিনি। এতে বিক্রি বেড়েছিল ঠিকই, তবে সেই খুশি ক্ষনিকের। লাভের তুলনায় উল্টে এখন ব্যবসা করাই দায় হয়ে গিয়েছে মাছ কাকুর।
কুশলবাবু ‘মাছ নেবেন দাদা মাছ নেবেন’ (Mach Neben Dada Mach Neben) গান গেয়ে মাছ বিক্রি করছিলেন। গানের মধ্যে দিয়েই মাছ দিয়ে রান্নার রেসিপিটাও সুন্দর করে বলে দিচ্ছিলেন তিনি। সেই গানের ভিডিও ক্যামেরাবন্দি করে শেয়ার করা হয় সোশ্যাল মিডিয়াতে। এরপরেই হু হু করে বাড়তে থাকে জনপ্রিয়তা। রাতারাতি একপ্রকার সেলেব্রিটি হয়ে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু মুশকিল হল এখন তার মাছ বিক্রিই বন্ধ হয়ে গিয়েছে, যার ফলে সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে।
শুরুতে মাছ কাকু ভেবেছিলেন গান গেয়ে ভাইরাল হয়ে বিক্রি বাড়বে। কিন্তু এখন ভাইরাল হওয়ার পর বাড়ি থেকে বাইরে বেরোনোটাও দুষ্কর হয়ে পড়েছে। বাইরে বেরোলেই সবাই তাকে ভাইরাল মাছ কাকু হিসাবে চিনে ফেলে ছবি তুলতে দৌড়োচ্ছে। কেউ সেলফি তুলছে তো কেউ ভিডিও করছে, এসবের জেরে মাছ বিক্রিই আর হচ্ছে না।
কুশলবাবুর কথায় বিগত দু সপ্তাহ যাবৎ বিক্রি বাট্টা বন্ধ। এভাবে তো সংসার চালানো দায় হয়ে গিয়েছে তার। তাই শেষমেশ নিজেই জানিয়েছেন নিজের দুঃখের কথা। তবে জানা গিয়েছে ভাইরাল মাছ কাকু একসময় কোনো এক অফিসে কেরানির চাকরি করতেন। কিন্তু লকডাউনে তাঁর চাকরি চলে যায়, তারপরেও মাছ বিক্রি শুরু করেন তিনি। কিন্তু ভাইরাল হয়ে বিক্রি বাড়ার বদলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে সেটাই এখন তার কাছে চিন্তার বিষয়।