শারীরিক সমস্যার দিকে নজর দিলেও অধিকাংশ মানুষ এতদিন উপেক্ষা করতেন মানসিক সমস্যার দিকটিকে। যদিও বর্তমানে অবস্থাটা অনেকটাই বদলেছে, আর তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ লন্ডনের বছর পঁচিশের কেরি বার্নস। মনোরোগ সংক্রান্ত তহবিল বা ট্রাস্টের জন্য তিনি অর্থ সংগ্রহে বেরিয়েছেন বটে, তবে তাঁর পদ্ধতিতে চক্ষু চড়কগাছ হয়েছে বিশ্ববাসীর।
সাইকেলে প্রায় অর্ধনগ্ন অবস্থায় বাকিংহাম প্যালেস, কনভেন্ট গার্ডেন ও টাওয়ার ব্রিজের মত এলাকা চষে ফেলেছেন তিনি। লন্ডনের মারাত্মক শীতেও একটি মাত্র থং ও স্তনে গ্লিটার মেখে জনতার উৎসুক চোখ এড়িয়ে ২৯শে নভেম্বর বেরিয়েছিলেন কেরি। এখনও পর্যন্ত মাইন্ড চ্যারিটি-র জন্য তাঁর সংগ্রহ প্রায় ৮.৩৬ লক্ষ টাকা।
২০১১ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সে আত্মহত্যা করেন কেলির দিদি। আর তারপর থেকেই দেশে ক্রমবর্ধমান আত্মহত্যার পরিসংখ্যান ঘেঁটে রীতিমত বিহ্বল হয়ে পড়েন কেরি। সংবাদমাধ্যমকে কেরি জানিয়েছেন, “লকডাউনের মধ্যেই আমার এক ঘনিষ্ঠ প্রায় তিনবার আত্মহত্যার চেষ্টা করে। ও হয়তো বেঁচে গেছে, কিন্তু যাদের কেউ দেখে না, যাদের কেউ সমর্থন করে না বা সামান্য মনের বল যোগানোর জন্যও যাদের কেউ নেই। আমি তাদের জন্য কিছু করতে চাই।”
মেইলের মাধ্যমে কেরি বার্নস জানিয়েছেন, “দ্বিতীয় পর্যায়ের লকডাউন শুরু হতেই আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আমার ভাবনা শুরু হয়ে যায়। আর তাই আমার নিজের তথা সমাজের প্রত্যেকের জন্য আমার এই চেষ্টা।” কেরি জানিয়েছেন, এমনতর ভাবনার মাঝেই আমার বাড়ির চাকরাণী নেহাত মজাচ্ছলেই বলে যে, “নগ্ন হয়ে সাইকেলে চাপলে তবেই অর্থ সংগ্রহ সম্ভব!”
চাকরাণীর জোকসই যে কেরির কর্মপদ্ধতি হয়ে দাঁড়াবে তা কেরি নিজেও জানতেন না। তাঁর কথায়, “গত তিনসপ্তাহে বহু মানুষ শুধু আমাকে দেখার বদলে এগিয়ে এসেছেন সাহায্যে। অনেকে তাঁদের গল্প আমার সাথে ভাগ করে নিয়েছেন। এত মানুষের ভালোবাসা পেয়ে আমি ধন্য।”
কেরি জানিয়েছেন যে, “ভ্রমণের সময় হয়তো মারাত্মক ঠান্ডা লাগত, কিন্তু কিছু ভালো করার তাগিদ আমাকে ভিতর থেকে উষ্ণতা জুগিয়েছে।” জাতিধর্ম নির্বিশেষে বিশ্বের সকল মানুষকে মনোরোগ সংক্রান্ত সমস্যার কথা খোলাখুলি বলার আহ্বান জানান কেরি।