বর্ষীয়ান অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীকে (Mithun Chakraborty) যদি ‘বাংলার গর্ব’ বলা হয়, তাহলে মোটেই অত্যুক্তি হবে না। জাতীয় স্তরে বাংলার নাম উজ্জ্বল করেছেন অভিনেতা। কোনও ‘গডফাদার’ না থাকা সত্ত্বেও বলিউডের (Bollywood) শীর্ষস্থানীয় অভিনেতাদের মধ্যে একজন হয়ে উঠেছেন এই বঙ্গ তনয়। তবে বাংলার সাধারণ এক ছেলে থেকে বলিউডের নামী অভিনেতা হওয়ার লড়াই এই কিন্তু একেবারেই সহজ ছিল না। সম্প্রতি এই নিয়ে মুখ খুলেছেন মিঠুন নিজে।
ইন্ডাস্ট্রির বাইরের লোক হলে বলিউডে সফল হওয়া যে ঠিক কতখানি কঠিন তা কারোরই অজানা নয়। এই কথাই ফের আরও একবার শোনা গেল মিঠুনের গলায়। আজ বলিউডের ‘ডিস্কো ড্যান্সার’ হিসেবে খ্যাত মিঠুন এক সময় না খেয়ে ফুটপাতে শুয়ে রাত কাটিয়েছেন। নিজের গায়ের রঙের জন্য শুনেছেন প্রচুর কটাক্ষ।
সম্প্রতি ‘সা রে গা মা পা লিটল চ্যাম্পস’এ গিয়েছিলেন মিঠুন। সেখানেই বলিউডে নিজের সংগ্রামের অজানা কাহিনী তুলে ধরেন অভিনেতা। বর্ষীয়ান এই অভিনেতা বলেন, গায়ের রঙ নিয়ে প্রচুর কটাক্ষ শুনতে হয়েছে তাঁকে। এই নিয়ে নিজের চোখের জলও ফেলতেন তিনি। অনেক সময় খালি পেটে শুয়েছেন। এমনকি বহুদিন কাঁদতে কাঁদতেও ঘুমিয়ে পড়তেন মিঠুন।
বলিউডের এই বর্ষীয়ান অভিনেতা বলেন, ‘যেরকম সময়ের মধ্যে দিয়ে আমি গিয়েছি সেই রকম সময়ের মধ্যে দিয়ে আর কেউ যাক আমি চাই না। অনেকেই বিভিন্ন রকমের স্ট্রাগলের মুখে পড়েন। কিন্তু আমায় সবসময় গায়ের রঙের জন্য কটাক্ষ করা হতো। অনেক বছর আমি এই অপমান সহ্য করেছি। এমনও দিন গিয়েছে যখন খালি পেটে শুয়েছি। কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়তাম। এমনও অনেক দিন গিয়েছে যখন ভাবতাম এরপরের খাবারটা পাবো তো? অনেকদিন তো ফুটপাথেও ঘুমিয়েছি’।
আর ঠিক এই কারণেই মিঠুন চান না কোনোদিন তাঁর বায়োপিক তৈরি করা হোক। অভিনেতার কথায়, ‘এই জন্যই আমি চাই না আমার বায়োপিক তৈরি করা হোক। আমার গল্প কাউকে অনুপ্রাণিত করবে না। বরং মন ভেঙে দেবে। মানুষকে নিজের স্বপ্ন পূরণ করার পথে এগোতে ভয় ধরিয়ে দেবে। আর আমি চাই না এমনটা হোক’।
মিঠুনের সংযোজন, ‘আমি যদি সফল হতে পারি, তাহলে বাকিরাও পারবে। এই ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেকে প্রমাণ করার জন্য প্রচুর লড়াই করেছি। হিট ছবি দেওয়ার জন্য কিন্তু আমি লেজেন্ড নই। বরং অনেক কষ্ট ও জীবন সংগ্রাম অতিক্রান্ত করেছি বলে আমি নিজেকে লেজেন্ড ভাবি’। প্রসঙ্গত, ১৯৭৬ সালে ‘মৃগয়া’ ছবি দিয়ে বলিউডে ডেবিউ করার পর মিঠুন ‘ডিস্কো ড্যান্সার’, ‘অগ্নিপথ’, ‘বক্সার’এর মতো বহু সুপারহিট ছবিতে অভিনয় করেছেন। পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার। বর্ষীয়ান এই অভিনেতাকে শেষ দেখা গিয়েছে, চলতি বছর মুক্তিপ্রাপ্ত সুপারহিট সিনেমা ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’এ।