বলিউড ‘বাদশা’ শাহরুখ খানের (Shah Rukh Khan) কেরিয়ার শুরু হয়েছিল টেলিভিশনের মাধ্যমে। ‘ফৌজি’, ‘সার্কাস’এর মতো শোয়ের হাত ধরেই জনপ্রিয়তা পাওয়া শুরু করেছিলেন তিনি। তবে ১৯৯১ সালের এপ্রিল মাসে মায়ের মৃত্যুর পর মুম্বই এসে বলিউডে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন শাহরুখ। তবে সেই পথে বাধা হয়েছিল প্রেমিকা গৌরীর (Gauri Khan) সঙ্গে তাঁর প্রেম।
কারণ শাহরুখ যদি মুম্বই চলে আসতেন, তাহলে গৌরী এবং তাঁর শহর আলাদা হয়ে যেত। শেষ পর্যন্ত হয়তো প্রেমটাও টিকত না। আর ঠিক সেই কারণেই শাহরুখের মুম্বই পাড়ি দেওয়ার বিষয়ে নিমরাজি ছিলেন তাঁর তৎকালীন প্রেমিকা। পরিস্থিতি সামাল দিতে একটি প্ল্যান নিয়ে হাজির হন ‘কিং খান’। প্রেমিকা গৌরীকে ‘এক বছরের হানিমুন’এর অফার দেন তিনি।
অনুপমা চোপড়ার ‘কিং অফ বলিউডঃ শাহরুখ খান অ্যান্ড দ্য সেডাকটিভ ওয়ার্ল্ড অফ ইন্ডিয়ান সিনেমা’ বইয়ে শাহরুখের জীবনের নানান অজানা কাহিনী ফুটে উঠেছে। এমনই একটি কাহিনী হল তাঁর এবং গৌরীর এই কাহিনী। সেই বইয়ের মাধ্যমেই জানা যায়, শাহরুখ নাকি বলিউডে পা রাখার আগে গৌরীকে কথা দিয়েছিলেন, তাঁর যদি এক বছরের মধ্যেও বলিউড ভালো না লাগে, তাহলে তিনি বলিউডে কাজ করাই ছেড়ে দেবেন।
তবে গৌরী সেই সময় বুঝতে পেরেছিলেন, শাহরুখের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক বাঁচিয়ে রাখতে হলে তাঁকে এখনই তাঁর সঙ্গে সাত পাক ঘুরতে হবে। নাহলে তাঁর মা-বাবা হয়তো অন্য জায়গাতেই তাঁর বিয়ে দিয়ে দেবেন। শাহরুখ ঘরণীর কথায়, ‘আমি যদি ওঁকে তখন বিয়ে না করতাম, তাহলে হয়তো আর কোনোদিনই করতে পারতাম না’। শেষে মা-বাবার সম্মতিতে শাহরুখকে বিয়ে করে তাঁর সঙ্গে মুম্বই যান গৌরী।
১৯৯১ সালের ২৫ অক্টোবর প্রেমের সম্পর্কের ৭ বছর পূর্তির দিনে সাত পাক ঘুরেছিলেন শাহরুখ এবং গৌরী। সেই সময় দু’জনের বয়স ছিল যথাক্রমে ২৬ এবং ২১ বছর। প্রথমে রেজিস্ট্রি করে এবং এরপর হিন্দু ধর্মের রীতিনীতি অনুযায়ী, গাঁটছড়া বাঁধেন দু’জনে।
সদ্য বিয়ে করে মুম্বই যাওয়ার পর শাহরুখের বন্ধু তথা অভিনেতা-প্রযোজক বিবেক বাসবানী তাঁদের মুম্বইয়ের সান অ্যান্ড স্যান্ড হোটেলে ৩ রাত থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। এরপর প্রযোজক আজিজ মির্জার ফাঁকা ফ্ল্যাটে গিয়ে ওঠেন দু’জনে। সেখানে শুধুমাত্র দু’টো গদি, একটি ফ্রিজ এবং একটি টিভি ছিল। জানা যায়, নিজের ফ্ল্যাট না হওয়া অবধি গৌরী আসবাবপত্র কিনতে রাজি ছিলেন না। তবে সৌভাগ্য বশত মুম্বই আসার পরই একের পর এক ছবির অফার পেতে থাকেন শাহরুখ এবং ধীরে ধীরে বলিউডের পরিচিত নাম হয়ে ওঠেন।