‘বলিউড(Bollywood)’ এই নামটার সাথে না জানে কত লোকের স্বপ্ন আর জীবনের একটা বড় চাহিদা লুকিয়ে আছে প্রতিবছরই হাজার হাজার ছেলে মেয়ে বলিউডে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার জন্য চেষ্টা করে কিন্তু তাদের মধ্যে হয়তো খুব কম সংখ্যকই নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে উঠতে পারে। বলিউডে এমন অনেক ব্যক্তিত্ব রয়েছে যারা এক সময়ে খুবই কষ্টে দিনযাপন করেছেন এবং নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য অনেক কষ্ট করেছেন। এই সমস্ত অভিনেতা অভিনেত্রীদের আজ আমরা হয়তো বলিউডের প্রথম সারির সেলিব্রেটি হিসেবে চিনি। এমনই একজন অভিনেতা হলেন আশীষ বিদ্যার্থী (Ashish Vidyarthi)।
দিল্লির করোল বাগের একটা ভাড়া বাড়িতে জন্ম হয়েছিল বর্তমানের বলিউডের বিখ্যাত খলনায়ক (Villian)আশীষ বিদ্যার্থীর। খুব ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের দিকে দেশ আকর্ষণ ছিল অভিনেতার। তাই পড়াশোনার পাশাপাশি অভিনয়ের প্রতি একটা আলাদা টান জন্মেছিল। অবশ্য শুধুমাত্র অভিনয় শিখে থামেননি শিখেছিলেন নাচ ও, কত্থক নাচ পারদর্শী করে তুলেছিলেন নিজেকে।
কলেজ জীবনে ইতিহাসের ছাত্র ছিলেন তিনি। আর পড়াশোনার সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন মনোজ বাজপাই (Manoj Bajpai)এবং বিশাল ভরদ্বাজদের (Bishal Bhardwaj) মত অভিনেতাদেরও। স্নাতকোত্তর পড়াশোনা শেষ করার পর অভিনয়ে দক্ষতা আরো বৃদ্ধি করার জন্য নেশনাল স্কুল অফ ড্রামা তে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু স্নাতক হওয়ার পরেই পরিবারের বা বলা ভালো সংসারের দায়িত্ব এসে পড়েছিল তার কাঁধে। অভিনয়ের দক্ষতার উপর ভরসা রেখে কাজের খোঁজে হাজার 992 সালে দিল্লি থেকে মুম্বাই চলে আসেন আশীষ।
মুম্বাইয়ে কাজের খোঁজে এসে প্রথম অভিজ্ঞতাগুলো খুব একটা ভালো ছিল না। অভিনেতার গায়ের রং কালো হওয়ার জন্য কাজ পাওয়া তো দূর বহু কুরুচিকর মন্তব্যের সম্মুখিন হতে হয়েছিল অভিনেতা কে। বলিউডের বিখ্যাত সমস্ত প্রযোজনা সংস্থার দরজায় কাজের জন্য ঘুরে বেড়াতেন এমনকি হাজার অপমান মুখ বুঝে সহ্য করেও নিজের অভিনয় দক্ষতার ওপর ভরসা রেখে থেকে গিয়েছিলেন মুম্বাই নগরীতেই।
এরপর 1986 সালে বলিউড নয় কন্নড় ভাষার ছবি ‘ আনন্দ ‘ এ অভিনয়ের সুযোগ মেলে। এরপর বলিউডেও ধীরে ধীরে কাজ মেলতে শুরু করে। তবে বলিউডের দ্রোহকাল ছবিতে অভিনয়ের পরেই পরিচিতি মিলেছিল আশীষ বিদ্যার্থীর। ছবিতে নিজের দুর্দান্ত অভিনয় এর জন্য জাতীয় পুরস্কার পর্যন্ত পেয়েছিলেন অভিনেতা।জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পর কাজ হয়তো মিলেছিল তবে বলিউডে সেভাবে প্রতিপত্তি বাড়েনি অভিনেতার।
এমনকি শুনলে হয়তো অবাক হবেন বলিউডের দীর্ঘদিন কাজ করার পরেও ভাড়া বাড়িতে থাকতেন অভিনেতা। প্রায় ২০১৫ সাল পর্যন্ত মূলত দক্ষিণী ছবিগুলি দেখতে পাওয়া যেত আশীষ বিদ্যার্থীকে। নায়ক হিসেবে নয় তবে খলনায়ক হিসেবে তার অভিনয় দক্ষতা তুলনাহীন। বলিউড তথা সাউথের অভিনেতা হওয়ার পাশাপাশি বাস্তব জীবনে আরেকটি পেশার সাথে যুক্ত রয়েছেন অভিনেতা। মোটিভেশনাল স্পিকার তিনি, হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন নিজের জীবনের সংগ্রামের পথ হেঁটে আসার পর আজ আরো বহু মানুষকে উৎসাহের পথ দেখিয়ে দিচ্ছেন তিনি।