আশির দশকে হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে (Bollywood) রাজত্ব করেছেন যে অভিনেতারা তাঁদের মধ্যে একজন হলেন সঞ্জয় দত্ত (Sanjay Dutt)। তারকাসন্তান হলেও নিজের দুর্দান্ত অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের মনে বিশেষ স্থান অর্জন করে নিয়েছিলেন তিনি। তবে নিজের সুদীর্ঘ কেরিয়ারে বারবার বিতর্কেও জড়িয়েছে সঞ্জয়ের নাম। মাদক সেবন (Drug addiction) থেকে জেলযাত্রা- বাদ যায়নি কিছুই।
সঞ্জয়ের কর্মজীবনের মতোই ব্যক্তিগত জীবনও বরাবর আলোচনার কেন্দ্রে থেকেছে। তবে যতই বিতর্কে জড়ান না কেন, মহিলামহলে নার্গিস-পুত্রের ক্রেজ ছিল দেখার মতো। নিজের বায়োপিকেই এই বিষয়ক তথ্য তুলে ধরেছিলেন অভিনেতা। তবে অনেকেই জানেন না, প্রথম প্রথম নাকি মেয়েদের সঙ্গে কথা বলার সাহসটুকুও ছিল না সঞ্জয়ের। সেই সাহস অর্জনের জন্যই নেশা করা শুরু করেছিলেন তিনি।
একবার এক সাক্ষাৎকারে অভিনেতা বলেছিলেন, ‘আমি কিছুতেই মেয়েদের সঙ্গে কথা বলতে পারতাম না। সেই সময় আমরা বন্ধুরা বলেছিলেন, নেশা করলে নাকি মেয়েদের সঙ্গে কথা বলার আত্মবিশ্বাস আসে। সেই লোভ থেকে আমি নেশা করা শুরু করেছিলাম’। পর্দার ‘মুন্নাভাই’ বলেছিলেন, কলেজে পড়ার সময় নেহাত শখ থেকেই নেশা করা শুরু করেছিলেন তিনি। তবে সেই ‘শখ’ কবে ‘অভ্যাসে’ পরিণত হয়ে গিয়েছিল তা তিনি বুঝতে পারেননি।
সঞ্জয় নিজেই স্বীকার করেছিলেন, হেরোইন সহ সব ধরণের মাদকের নেশা তিনি করেছেন। তাঁর জীবনে এমন একটা সময় এসেছিল যখন মাদক ছাড়া এক মুহূর্তও চলতো না। সঞ্জয়ের ডেবিউ ছবি ‘রকি’ রিলিজের সময় মাদকের নেশায় একেবারে ডুবে থাকতেন অভিনেতা। সেই ছবির শ্যুটিংয়ের সময় সঞ্জয়ের মা তথা অভিনেত্রী নার্গিস ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তখন মাদক না নিলে সেই পরিস্থিতি সামলাতে পারতেন না।
সঞ্জয় নিজেই একবার বলেছিলেন, দুই বোন নম্রতা এবং প্রিয়ার সঙ্গে একবার বিমানে করে যাত্রা করছিলেন তিনি। তবে সেই সময়টুকুও মাদক ছাড়া তিনি থাকতে পারছিলেন না। অভিনেতার কথায়, ‘সেই সময় বিমানে এত কড়াকড়ি ছিল না। সেই জন্য নিজের মোজার ভেতর ১ কেজি হেরোইন লুকিয়ে রেখেছিলাম। আমি কোথাও ধরাও পড়িনি’।
তবে সেই ঘটনা এখন মনে পড়লে শিউড়ে ওঠেন সঞ্জয়। অভিনেতার কথায়, ‘এখন সেকথা মনে পড়লে আমার খুব ভয় হয়। আমি তো জেলে যেতামই। তবে আমার দুই বোনের সঙ্গে কী হতো। পুরো পরিবারের জন্য আমি বিপদ ডেকে আনতাম’। নিজের জীবনের এই অভিজ্ঞতা থেকে এখনকার প্রজন্মের উদ্দেশে বার্তা দিয়ে সঞ্জয় বলেন, ‘জীবনে ‘হাই’ হতে চাইলে ভালো কাজ করো। নিজের স্বতন্ত্র পরিচিতি তৈরি করো। নেশা করে ‘হাই’ হওয়ায় কোনও লাভ নেই। এটা করে স্রেফ নিজের ধ্বংস ডেকে আনবে’।