৯০-এর দশকে ক্রান্তি, বাদল, নাকাব, ইয়ামলা পাগলা দিওয়ানা-র মত সুপারহিট চলচ্চিত্রে অভিনয় করার পরে বিগত দুই দশকে পর্দায় দীর্ঘসময় যাবৎ অনুপস্থিত ছিলেন ববি দেওল। সম্প্রতি সলমন খানের সঙ্গে ‘রেস ৩’ ছবিতে তাঁর পুনরাগমন ঘটে। ‘হাউসফুল ৪’-এর মত বড় ছবির কাস্টিংয়েও তাঁর নাম উঠে আসে।
কিছুদিন আগেই এক সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে ববি দেওল স্মৃতিরোমন্থন করেন, জানান তাঁর ফেলে আসা দিনের কথা। তখনই কথার মাঝে ববি দেওল তাঁর মদ্যপানের প্রতি আসক্তির সম্পর্কে জানান বলে খবর সূত্রের। জানা গেছে, তিনি বলেন যে তাঁর সন্তানরাও তাঁকে জিজ্ঞাসা করত যে উনি কেন কাজ করেন না! আর তাতেই নাকি উনি আরও বেশি করে মুষড়ে পড়েন।
এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে ববি দেওল জানান, “আমি যে ছবিগুলিতে কাজ করার অফার পেয়েছিলাম, সেগুলি ঠিক আমার ধরনের ছিল না। আমি যে ধরনের ছবি খুঁজছিলাম, সেগুলি না পেয়ে আমার কেরিয়ার ধ্বংসের দিকে এগোচ্ছিল। নব্বইয়ের দশকে এতগুলো ভালোমানের ছবি করা সত্ত্বেও হারিয়ে যাচ্ছিলাম আমি। আমাকে কেউ মনে রাখেনি। আমার পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য আমি। অর্থের চিন্তা তাই আমাকে কুড়েকুড়ে খাচ্ছিল।” ববি দেওলের চোখেমুখের অভিব্যক্তিতেই প্রকাশ পেয়েছে কেন আসক্তির দিকে এগিয়েছিলেন ববি।
পরিবারের সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে ভেঙে পড়েন ববি দেওল। সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, “আমি যখন এইসব ছায়াছবিতে অভিনয় করছিলাম, তখনও আমি নেশায় ডুবে থাকতাম। আমার পরিবার আমার চোখে চোখ রাখতে পারত না। আমাকে দেখে তারাও দুঃখিত হয়ে পড়ত। আমার সন্তানরা, আমার স্ত্রী, মা-বাবা প্রত্যেকেই আমাকে নিয়ে চিন্তিত ছিল। কিন্তু অবশেষে আমি যে এই খারাপ সময় কাটিয়ে উঠতে পেরেছি, তার সম্পূর্ণ কৃতিত্ব আমার পরিবার আর সহকর্মীদের।” ধরা গলায় ববি আরও বলেন, “আমি সেইসময় প্রচুর প্রোডিউসারের সাথে দেখা করি। কিন্তু সেভাবে আমাকে সাহায্য করতে পারেননি। অবশেষে সলমন খান আমাকে সাহায্য করেন। সলমনকে আমি মামু বলি। মামু বলেন যে, উনিও ওনার খারাপ সময়ে ভাই (সানি দেওল) ও সঞ্জয় দত্তের প্রভূত সাহায্য পেয়েছেন, তাই এইসময়ে আমাকেও একাগ্রভাবে ছবির দিকে মনোযোগ দিতে হবে।” উজ্জ্বল চোখে ববি দেওল জানান যে, সলমনের এই টোটকা তাঁর কাজে লেগে যায়।
বর্তমানে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ‘ক্লাস অফ ৮৩’-এর কারণে বাহবা কুড়োচ্ছেন ববি দেওল। চিত্র পরিচালকরা বলছেন, নব্বইয়ের দশকের ববির ঝলক দেখা গেছে পুনরায়। স্বভাবতই খুশির হাওয়া বইছে ববির পরিবারে।