বাঙালির বিনোদনের সাথে সম্পর্ক বিগত কয়েক দশকের। আর বাংলা সিনেমাকে সম্মৃদ্ধ করেছেন এমন তারকাদের নাম বলতে গেলেই উঠে আসে অনামিকা সাহার কথা। হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন, বাংলা ছবির আইকনিক খলনায়িকা ‘বিন্দু মাসি’ অভিনেত্রীর কথাই বলছি। বাংলা ছবির জগতে খল নায়িকা ছাড়া সিনেমা এককথায় অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তবে বাংলার খলনায়িকা হিসাবে আজও প্রত্যেকের কাছে স্মরণীয় অভিনেত্রী অনামিকা সাহা।
একসময় একাধিক বাংলা ছবিতে চুটিয়ে কাজ করেছিলেন অভিনেত্রী। তবে বর্তমানে সময়ের ছবিতে খুব একটা অভিনয় করতে দেখা যায় না তাকে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে পুরোনো দিনের স্মৃতিচারণ করতে দেখা গেল অভিনেত্রীকে। সাথে প্রকাশ্যে এল আক্ষেপ। জি বাংলার জনপ্রিয় লক্ষীকাকিমা সুপারস্টার সিরিয়ালের অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্যকে নিয়ে বেশি কিছু কথা এদিন সাক্ষাৎকারে তুলে ধরেছেন অভিনেত্রী।
তবে শুরুতেই জানিয়ে রাখি, অভিনেত্রীর আসল নাম কিন্তু অনামিকা নয়। অভিনয়ের আসার আগে তাঁর নাম ছিল উষা, তবে অভিনয়ের শুরুতেই বা বলতে গেলে ইন্ডাস্টিতে প্রথম কাজের সময়েই নাম পাল্টে হয়ে যান অনামিকা সাহা। ৭০ এর দশকে ‘আশার আলো’ ছবি দিয়েই শুরু হয়েছিল কেরিয়ার। এরপর একাধিক সিনেমায় দুর্দান্ত অভিনয়ের জেরে দারুন জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন তিনি।
বাংলা ছবিতে জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর মুম্বাই থেকেও ডাক এসেছিল। ‘অনুসন্ধান’ ছবিতে বিখ্যাত গান ‘ফুলকলি রে ফুলকলি’ এর জন্য ডাক পেয়েছিলেন তিনি। সেই গানের শুটিংয়ের জন্য মুম্বাই গিয়ে বুঝতে পারেন মায়ানগরী তাঁর জন্য নয়। বলিউডের ঝা চকচকে জীবনের মিশতে হলে মদ-সিগারেট খেতে হবে, বন্ধুত্ব করতে হবে, তখনই সে সব ছেড়ে চলে আসেন তিনি।
এরপর ঘাতক ছবিতে দেখা গিয়েছিল অভিনেত্রীকে। যেখেনে আইকনিক ‘বিন্দু মাসির’ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। নিজের সেই চরিত্রের অভিনয়ের জন্য বাংলার গব্বর সিং হিসাবে পরিচিত হয়ে পড়েছিলেন অনামিকা সাহা। বাচ্চারা ঘুমাতে না চাইলে ভয় দেখানো হত এই বলে যে, ‘ঘুমিয়ে পর নাহলে বিন্দু মাসি এসে যাবে’। একসময় টলিউডের পর্দায় চুটিয়ে অভিনয় করতে দেখা গেলেও দীর্ঘদিন তাঁর দেখা মেলেনি রুপোলি পর্দায়। তবে কিছুদিন আগে রানি মুখোপাধ্যায়ের ‘মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে’ ছবিতে অভিনয়ের ডাক পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু করোনার জেরে সেই সুযোগ অধরাই থেকে গিয়েছে।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানান টলিউডের একাধিক অভিনেতার সাথে কাজ করেছেন তিনি। অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্যকে তিনিই হাত ধরে নিয়ে এসেছিলেন অভিনয় জগতে। আজ টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের মধ্যে একজন তিনি। কিন্তু কোথাও অনামিকা সাহার কৃতিত্ব তুলে ধরেননি। একরাশ ক্ষোভ ও আক্ষেপের সুর শোনা গিয়েছে অভিনেত্রীর গলায়।