নাসা তার “মার্স রোভার ২০২০” মিশনে লালগ্রহ মঙ্গলে নিরাপদ অবতরণের জন্য ভরসা করেছে বর্ধমানের ছেলে সৌম্যর ওপর। মার্কিন এই সংস্থা তার মঙ্গোল অভিযানের রোভারটিকে সৌম্যর বানানো প্যারাশুটে করেই মঙ্গল গ্রহে নামাতে চলেছে।
বাংলার বর্ধমান শহরে জন্ম হলেও স্কুলজীবন কেটেছে দেরাদুন ও মুম্বাইয়ে। এর পর ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়াকালীন আমেরিকায় চলে যায় সৌম্য। এরপর টেনেসি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে মাস্টার্স ও পিএইচডি। এরপর ২০১৩ সালে নাসায় এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে যোগ দেন সৌম্য দত্ত।
তবে বর্ধমানের সৌম্যর বানানো এই প্যারাশুট সাধারণ কোনো প্যারাশুট না। প্রায় ১৫ জন মানুষ একের ওপর এক দাঁড়ালে যতটা উঁচু হয়,তত উঁচু এই প্যারাশুট। আর এই বিশালাকার প্যারাশুট বানিয়েছে সৌম্য নিজেই। এতে করে মঙ্গলে পদার্পন করবে নাসার “মার্স রোভার ২০২০” মিশনের পারসিভের্যান্স আর ল্যান্ডার।
প্রসঙ্গত এর আগে এতো বড় কোনো প্যারাশুট কখনোই ব্যবহার করেনি নাসা। এই প্রথম এই দৈত্যাকার প্যারাশুটের ব্যবহার করতে চলেছে নাসা। অবশ্যি এমন দৈত্যাকার প্যারাশুট না থাকলে মার্স ২০২০ রোভার ও ল্যান্ডারকে মঙ্গলবক্ষে নামানো সম্ভব হাত না নাসার।
কেন এই প্যারাশুট? এর উত্তরে ভার্জিনিয়ায় অবস্থিত নাসার রিসার্চ সেন্টারের এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার সৌম্যর বক্তব্য , এই ধরণের প্যারাশুটের বিশেষ প্রয়োজন ছিল। কারণ ল্যান্ডার ও রোভার নাবানোর জন্য এবার আর মঙ্গলের কক্ষ প্রদক্ষিণ করবে না রকেট। রকেটে ক্যাপিয়ে মার্স রোভার ২০২০ পাঠানো হবে। যা পৃথিবী থেকে সোজা মঙ্গল গ্রহের কক্ষপথে ঢুকে গেলেই দ্রুত নামতে শুরু করবে। সেক্ষেত্রে মঙ্গলের ভূপৃষ্ঠ থেকে রকেটের উচ্চতা থাকবে ১২৫ কিমি। সাথে রকেটটি প্রতি সেকেন্ডে ৫ কিমি বেগে নামতে থাকবে। এর গতিবেগে মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে রকেট নিয়ন্ত্রণ করা ও গতিবেগ কমানে সম্ভব না। যেকোনো মুহূর্তে ঘর্ঘটনা ঘটতে পারে। সাথে সমস্ত জিনিস বায়ুমণ্ডলেই পুড়ে চাই হয়ে যাবার সম্ভাবনাও থাকে।
নিচে পড়ার সময় প্রচন্ড তাপের থেকে বাঁচানোর জন্য এক বিশেষ রকমের হিট-শিল্ড বানানো হয়েছে। সাথে এই ল্যান্ডের ও রোভার কে নামানোর জন্যই এই বিশালাকার প্যারাশুট। প্যারাশুটের ব্যাস প্রায় ২১ মিটার ,তবে এটি খুলতে সময় নেবে মাত্র ১ থেকে ২ সেকেন্ড। প্যারাশুট খুলে গেলেই রাডারের ক্যামেরা নিরাপদ অবতরণের স্থান নির্বাচন শুরু করতে ছবি তোলা শুরু করবে।