ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের (Bankim Chandra Chatterje) ‘আনন্দমঠ’ (Anandamath) উপন্যাস। ব্রিটিশ শাসন চলাকালীন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে যুদ্ধের ডাক উঠেছিল এই উপন্যাস। আনন্দমঠ উপন্যাসই প্রথম ‘বন্দে মাতরম’ এর সাথে পরিচয় করিয়েছিল ভারতবাসীর। সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের অমর সৃষ্টি ‘আনন্দমঠ’ এবার ফুটে উঠতে চলেছে সিনেমার রুপোলি পর্দায়। দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির হাত ধরেই সিনেমায় রূপ নিতে চলেছে এই বিখ্যাত উপন্যাস।
বিগত ৮ই এপ্রিল সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের ১২৮তম মৃত্যু বার্ষিকীতে এই দারুন খবর জানা গেল। ‘১৯৭০ এক সংগ্রাম’ (1970 Ek Sangram) এই নামেই সিনেমার পর্দায় ফুটে উঠবে ‘আনন্দমঠ’। এদিন ছবির ঘোষণার পাশাপাশি প্রকাশ্যে আনা হয়েছে চিত্রনাট্যকার লেখকের নামও। এই ছবির জন্য লেখালিখির কাজ করবেন কে ভি বিজয়েন্দ্র প্রাসাদ (K V Vijayendra Prasad)। সম্প্রতি গোটা পৃথিবীব্যাপি রেকর্ড করা আরআরআর ছবিটি তারই লেখা। এছাড়াও এর আগে বাজরাঙ্গি ভাইজান থেকে বাহুবলী ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন কে ভি বিজয়েন্দ্র।
তবে শুধুমাত্র চিত্রনাট্যের জন্য পরিচিত হন কে ভি বিজয়েন্দ্র প্রাসাদ , তিনি বাহুবলি ও আরআরআর ছবির পরিচালক এস এস রাজামৌলির বাবা। বিজয়েন্দ্র প্রাসাদ জানিয়েছেন, অনেক বছর আগে ‘আনন্দমঠ’ পড়েছিলেন তিনি। তাই যখন প্রথম এই উপন্যাসের ওপর ছবি তৈরির জন্য প্রস্তাব আসে তাঁর কাছে তখন একটু অবাক হয়েছিলেন।
তিনি জানান, ‘সত্যি বলছি, আমার মনে হচ্চিল না যে বর্তমান প্রজন্ম এই বিখ্যাত উপন্যাসের বিষয়বস্তুর সাথে কোনোভাবে একাত্ম হতে পারে বলে। তবে যখন আমি রাম কমলের সাথে কথা বলি তখন সে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি পেশ করা আমার কাছে। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ছিল আমার থেকে একেবারেই আলাদা। যেটা অনেকটা বাণিজ্যিৎক আর মানুষের ভাবনার সাথে যুক্ত’।
শুধু তাই নয়, বেশ কিছুটা আলোচনার পর আনন্দমঠ উপন্যাসটিকে নিয়ে নতুন ধরেনের একটি চিত্রনাট্য লেখা শুরু করতে চলেছেন তিনি। তবে কাজটা বেশ চ্যালেঞ্জিং তাঁর কাছে। কারণ স্বয়ং বঙ্কিমচন্দ্রের লেখা উপন্যাস আনন্দমঠ। যেটা একসময় সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাধীনতার জন্য সংগ্রামের বীজ বপন করেছিল।
আনন্দমঠ এর চিত্রনাট্য নিয়ে তৈরী হতে চলা এই ছবির জন্য ক্রিয়েটিভ প্রযোজক হিসাবে থাকছেন জি ষ্টুডিওর সুজয় কুট্টি ও লেখক তথা শর্ট ফিল্ম নির্মাতা রাম কমল মুখোপাধ্যায়। দুজনের মতেই, ভারতী সাহিত্যের মধ্যে এমন অনেক রত্ন লুকিয়ে রয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাদের দেশের মানুষেরাই সেটা ভুলে গিয়েছে।
তাঁরা মনে করেন, সাহিত্যের মধ্যে যে সমস্ত অমর সৃষ্টি রয়েছে সেগুলি চলচ্চিত্র এর রূপে আমাদের সকলের সামনে আসা উচিত। ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে সন্ন্যাসীদের লড়াই যে স্বাধীনতা সংগ্রামের বীজ বুনেছিল সমসাময়িক মানুষের মধ্যে সেটা বর্তমান প্রজন্মের জানা উচিত।
প্রসঙ্গত, ছবির শুটিংয়ের জন্য ইতিমধ্যেই বেশ কিছু জায়গা বেছে নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ, হাদরাবাদ ও লন্ডন রয়েছে। এই সমস্ত লোকেশনে শুটিং হবে ‘১৭৭০- এক সংগ্রাম’ ছবির। ছবিটি প্যান ইন্ডিয়া রিলিজ হবে, তামিল তেলেগু ছাড়াও হিন্দিতেও মুক্তি পাবে ছবিটি।