লতা মঙ্গেশকর, ভারতের অন্যতম বিখ্যাত প্লেব্যাক গায়িকা, তাঁর কন্ঠে এক হাজারেরও বেশি হিন্দি ছবির গান রয়েছে। কোকিলের থেকেও মিষ্টি কন্ঠ তাঁর। ওমন সুন্দর গলার জন্য তাঁকে ‘ভারতের নাইটেঙ্গেল’ বলা হত৷ তার উপর ঈর্ষাও ছিল অনেকেরই। একসময় তিনি প্রবল অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। অনেকের মতে কেউ ভারত রত্ন পুরষ্কার প্রাপ্ত এই প্রবাদপ্রতিম গায়িকাকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন।
প্রবীণ লেখক পদ্মা সচদেব, যিনি গায়িকা লতা মঙ্গেশকরের খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন, তিনি একটি বই লিখেছিলেন যেখানে তিনি প্রকাশ করেছিলেন যে একসময় গায়িকাকে স্লো পয়েজনিং করার চেষ্টা হয়েছিল। ‘আইসা কাহান সে লাওঁ’ বইতে পদ্মা সচদেব প্রথমবারের মতো প্রকাশ করেছেন যে ১৯৬৩ সালে লতাকে স্লো পয়জন দেওয়া হয়েছিল। অলৌকিকভাবে, কণ্ঠশিল্পী সেই যাত্রায় বেঁচে গিয়েছিলেন।
তার বইয়ে লিখেছেন: “লতাজি আমার কাছে এটি প্রকাশ করেছিলেন। ১৯৬৩ সালে তার বয়স ছিল 33 বছর। একদিন ভোরবেলা তার পেটে প্রচণ্ড ব্যথা ছিল এবং তিনি বমি করেছিলেন। দু-তিনবার সবুজাভ তরল বমি হয় তার।ব্যথার কারণে লতা পা নাড়াতে পারছে না, সারা শরীর ব্যাথায় কাতরাচ্ছে। দশদিন পর তার স্বাস্থ্যের উন্নতি হতে শুরু করে। এরপর ডাক্তার তাকে বলেছিল যে কেউ তাকে ধীর বিষ দিয়েছে।”
সেই সময়ে জানা যায় যে লতা মঙ্গেশকরের বাবুর্চি কোনও চিহ্ন ছাড়াই বা এমনকি তার বেতন সংগ্রহ না করেই অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল। বইটিও একই দাবি করেছে। ঘটনার পর, বলিউডের বিখ্যাত গীতিকার মাজরুহ সুলতানপুরি প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টায় লতাজির বাড়িতে যেতেন। মাজরুহ প্রথমে খাবারের স্বাদ নিতেন তারপর লতাকে খেতে দিতেন। এ কথাও রটেছিল এ কান্ড নাকি আশা ঘটিয়েছিলেন। কিন্তু এটা পুরোই মিথ্যে রটনা।
আজ সকালেই ৯২ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন সুর সাম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar)। মাল্টি অরগ্যান ফেলিওর হয়েই মারা যান লতা। বেশ কিছুদিন ধরেই হাসপাতালে ভুগছিলেন সুরের সাম্রাজ্ঞী। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল বেশ কিছুদিন। তবে এরপর ভেন্টিলেশন থেকে বাইরে এসেছিলেন শারীরিক অবস্থার উন্নতিও হচ্ছিলো। তবে শনিবার রাতেই আচমকা অবনতি হতে শুরু করে। পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাওয়ায় ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয় লতা মঙ্গেশকরকে। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি।