ভারতের তো বটেই, সমগ্র বিশ্বের সঙ্গীত জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar)। কিংবদন্তি এই গায়িকা যে কত আইকনিক গান গেয়েছেন তা গুনে শেষ করা যাবে না। ভালোবাসা থেকে শুরু করে দেশাত্মবোধক – লতা মঙ্গেশকর গাইছেন মানেই সেই গান সুপারহিট। নিজের গানের মাধ্যমেই প্রয়াণের পরেও কোটি কোটি শ্রোতার মনে বেঁচে আছেন ‘কোকিলকণ্ঠী’ এই গায়িকা।
লতার প্রয়াণের পর সময়ে অসময়ে তাঁর নানান কাহিনী শেয়ার করেছেন তাঁর বোন তথা প্রখ্যাত গায়িকা আশা ভোঁসলে (Asha Bhosle)। গত বছর যেমন মুম্বইয়ে আয়োজিত প্রথম লতা দীনানাথ মঙ্গেশকর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রিয় ‘লতা দিদি’র সম্বন্ধে একটি অজানা কাহিনী সকলের সঙ্গে শেয়ার করেছিলেন তিনি। আর সেই ঘটনা শোনার পর ফের একবার শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়েছিলেন প্রত্যেকের।
আশা বলেছিলেন, বহু বছর আগে তাঁকে এবং লতাকে একটি বিয়েবাড়িতে (Wedding) আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল এবং অনুরোধ করা হয়েছিল গান গেয়ে শোনানোর জন্য। একথা শোনার পর লতা প্রথমে আশার থেকে জানতে চেয়েছিলেন তিনি গান গাইতে চান কিনা। জবাবে আশা বলেছিলেন, তিনি গান করতে আগ্রহী নন। সঙ্গে সঙ্গে প্রতিনিধিকে ডেকে লতা বলেছিলেন, তাঁদের যদি ১০ হাজার ডলারও দেওয়া হয় তাও কোনও বিয়েবাড়িতে তাঁরা গাইবেন না।
আশার কথায়, ‘কেউ আমাদের একটি বিয়েবাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। তাঁদের কাছে মিলিয়ন ডলার অথবা পাউন্ডের টিকিটও ছিল। তাঁরা শুধু বলেছিলেন, লতা মঙ্গেশকর এবং আশা ভোঁসলের গান শুনতে চান। একথা শুনে দিদি আমার জিজ্ঞেস করেন, ‘তুমি বিয়েবাড়িতে গান গাইতে চাও?’ আমি বলেছিলাম, ‘না’। দিদি এরপর প্রতিনিধিকে ডেকে বিলেন, ‘আমাদের ১০ কোটি ডলার দিলেও গাইব না। কারণ আমরা বিয়েবাড়িতে গাই না’। একথা শুনে সেই ব্যক্তি খুবই কষ্ট পেয়েছিলেন’।
একই অনুষ্ঠানে আশা জানিয়েছিলেন, ছোটবেলায় তিনি এবং লতা মা-বাবার পা ধোয়া জল খেতেন। কারণ লতা বিশ্বাস করতেন, মা-বাবার পা ধোয়া জল খেলে সন্তানরা জীবনে অনেক সাফল্য অর্জন করে। সেই কারণে ছোটবেলা থেকেই দিদির দেখাদেখি মা-বাবার পা ধোয়া জল খেতেন আশাও।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত বছর ৬ ফেব্রুয়ারি কোটি কোটি অনুরাগীকে কাঁদিয়ে ইহলোক ছেড়ে চিরতরে বিদায় নিয়েছিলেন লতা মঙ্গেশকর। মাল্টিপল অরগ্যান ফেলিওরের কারণে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিলেন গায়িকা। কিংবদন্তি এই শিল্পীর মৃত্যুর পর তাঁর পরিবারের তরফ থেকে লতা দীনানাথ মঙ্গেশকর পুরস্কার শুরু করা হয়েছে।