আজও বাংলা তথা গোটা সিনেমা জগতের কাছে অমূল্য সম্পদ বলে বিবেচিত হয় সত্যজিৎ রায়ের (Satyajit Roy) কালজয়ী সিনেমা ‘অপুর ট্রিলজি’। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Bibhutibhusan Bandopadhyay) লেখা ‘অপরাজিত’ (Aparajito) উপন্যাস অবলম্বনে সত্যিজিৎ রায়ের পরিচালনার প্রায় ৬০ বছর আগে বড় পর্দায় কিং বদন্তী অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের (Soumitra Chatterjee) হাত ধরে অপু চরিত্রের সাথে পরিচয় ঘটেছিল দর্শকদের।
সেই থেকে আজ পর্যন্ত অপু মানেই আপামর বাঙালির কাছে এক বিশেষ দুর্বলতার জায়গা। পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্রের মুন্সিয়ানায় ফের একবার এই আইকনিক চরিত্রের সাথে পরিচয় ঘটতে চলেছে দর্শকদের। ১৯৫৯ সালের ‘অপুর সংসার’ (Apur Sangsar)-এ সত্যজিৎ রায় যেখানে শেষ করেছিলেন ঠিক সেই দৃশ্যের পর থেকেই বিভূতিভূষণের উপন্যাসের শেষ অংশের ২০০ পাতা নিয়ে তৈরি হয়েছে এই সিনেমার চিত্রনাট্য।
বাঙালির কাছে অপু মানেই একটাই নাম মাথায় আসে। তিনি হলেন প্রয়াত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় অপু চরিত্রে তার অভিনয় চিরকালের জন্য দাগ কেটে গিয়েছে দর্শকদের মনে। এবার ২১ শতকের এই অপু চরিত্রে অভিনয় করতে চলেছেন অভিনেতা অর্জুন চক্রবর্তী (Arjun Chakraborty)। আর শর্মিলা ঠাকুর অভিনীত অপর্ণার চরিত্রে দেখা যাবে ছোটো পর্দার রানিমা অর্থাৎ দিতিপ্রিয়া রায়কে (Ditipriya Roy)।
অভিযাত্রিকের (Abhijantrik) মতো একেবারে অন্য ধারার এই ছবিতে অভিনয় করা সব্যসাচী পুত্র অর্জুনের কাছে রীতিমতো একটা চ্যালেঞ্জ। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের জুতোয় পা গলাচ্ছেন তিনি। এপ্রসঙ্গে সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমে অভিনেতা জানিয়েছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের চরিত্রে অভিনয় করার কথা শুনে একই সাথে ভয় এবং আনন্দ এই দুই অনুভূতি এক সঙ্গে এসেছিল তার। তবে সেইসাথে তিনি জানিয়েছেন ‘এই সিনেমায় সত্যজিৎ রায়ের কাজের কোনও ছাপ নেই। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয়ও নেই। আমি আমার মতো করে চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি।’
কিন্তু তারপরেও ‘অপু’ বাঙালির সবচেয়ে স্পর্শকাতর জায়গা। তাই সমালোচনা যে হবেই এটুকু নিশ্চিত। এপ্রসঙ্গে অর্জুনের সাফ জবাব ‘নিন্দা-প্রশংসা দুইই হবে। আমায় অনেক সমালোচনাও শুনতে হবে। সে সব জেনেই বলছি, এই অন্য কিছু তৈরির সাহস দেখানোরও প্রয়োজন ছিল।’ উল্লেখ্য ইতিমধ্যেই ছবিটি বিদেশের একাধিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার ও প্রশংসা কুড়িয়েছে। আগামী ৩ ডিসেম্বর বাংলায় মুক্তি পেতে চলেছে এই সিনেমা।