আজকালকার দিনে ‘সামান্য’ টেলি তারকাদেরও অহংকারে মাটিতে পা পড়েনা, অনুরাগীদের মাঝেমধ্যে মানুষ বলেও মনে করেন না তারা৷ অথচ সারা বিশ্বে যার জয়জয়াকার সেই অরিজিৎ সিং (Arijit Singh) এর জীবন চর্যা আর চর্চা দেখলে শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসে। রথী- মহারথীরা বলে থাকেন সাফল্য আসলেও মাটিতে পা থাকাটা জরুরি, নইলে গগনচুম্বী সাফল্য যে কখন মাটিতে এনে দাঁড় করাবে তার হৃদিশ পাওয়াও কঠিন হয়ে পড়বে। এই কথা যেন নিজের মনে গেঁথে নিয়েছেন দেশের প্রথম সারির জনপ্রিয় গায়ক অরিজিৎ সিং।
বিদেশ দিল্লি মুম্বই ঘুরেও জিয়াগঞ্জে পা রাখা মাত্রই তার তারকা সত্তা যেন কোথায় উবে যায়। তখন তিনি এক্কেবারে গ্রামের ছেলে। নাহ কোনোও নামি দামি চার চাকা না জিয়াগঞ্জে নিজের স্কুটি চড়েই ঘুরে বেড়ান অরিজিৎ। গায়ে থাকে অতিসাধারণ একটা টিশার্ট, পায়ে স্লিপার।
তার গান শুনলে শান্তিতে চোখ বুজে আছে, অরিজিত ম্যাজিকে আচ্ছন্ন আসমুদ্রহিমাচল। কিন্তু এতকিছুর পরেও তিনি মাটি ভোলেননা, ভোলেননি তার শুরুটা ঠিক কোথা থেকে। অন্যান্য সেলিব্রিটিরা যখন তাদের বিলাসবহুল জীবনযাপনের জন্য লাগাতার খবরে থাকেন তখন অরিজিৎ শিরোনাম কাড়েন তার সাধারণত্বের কারণে।
যার সারা বিশ্বে এত প্রভাব, মুম্বইয়ের আন্ধেরীতে যার নিজস্ব বাড়ি রয়েছে সেতো পারতেন নিজের একটা মাত্র ছেলেকে মায়ানগরীর নামি স্কুলে পড়াতে। কিন্তু তা করেননি গায়ক। ছেলেকে জুলকে তাই তিনি ভর্তি করেছেন নিজের শহর বহরমপুরের একটি স্কুলেই। নির্ধারিত সময়ের আগেই তিনি পৌঁছন মাউন্ট লিটেরা জি স্কুলের প্রবেশদ্বারে। গেট না খোলায় আর পাঁচজন অভিভাবকের সঙ্গেই দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন মিস্টার ভয়েস। ‘ন্যাশনাল সেলিব্রিটি’ হয়েও মৌলিক-প্রান্তিক থেকে গেলেন তিনি। পা রাখলেন মাটিতেই। তার এই সরলতা সাধারণ যেন নতুন পাঠ দিল বিনোদন জগতকে।