জীবন মরণের সীমানা ছাড়ায়ে, বন্ধু হে আমার রয়েছ দাঁড়ায়ে”! আজও ফেলুদা পড়তে বসলেই আমরা চেতনায় দেখতে পাই সৌমিত্র বাবুকেই।জীবন সংগ্রামে লড়ে চলা সেই অক্লান্ত অপু আজও বল জোগায় বেকার যুবকদের বুকে। হীরক রাজাদের গদি একাই টলিয়ে দিতে পারে উদয়ন পন্ডিতেরা। কিন্তু অবশেষে পথের খোঁজ না পেয়ে ‘তিন ভুবনের পারেই’ চলে গিয়েছেন অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। গতবছর ১৫ ই নভেম্বর বেলা ১২ টা ১৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন অভিনয় জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।
কিন্তু শারিরীকভাবে তিনি জগৎ থেকে বিদায় নিলেও যতদিন বাংলা সিনেমা থাকবে ততদিন বেঁচে থাকবেন সৌমিত্র বাবু। শেষ বয়স পর্যন্তও একেকটি মাস্টারপিস রেখে গিয়েছেন প্রয়াত অভিনেতা। ‘অপুর সংসার’ থেকে শেষ বয়সের ‘বেলাশেষে’ তার সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন একসময়ের তাবড় সুন্দরীরা। কেউ ছিলেন অপুর অপর্ণা, কেউ অমূল্যর মৃণ্ময়ী, কেউ আবার অমলের চারুলতা। পর্দায় এভাবেই বারবার সৌমিত্র-সঙ্গিনী হয়ে উঠেছিলেন শর্মিলা ঠাকুর, অপর্ণা সেন, মাধবী মুখোপাধ্যায়, সুচিত্রা সেন, তনুজা থেকে স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত।
অপর্ণা সেন:
একসময় পর্দার নায়কের পরিচালক হিসেবেও কাজ করেছেন অপর্ণা সেন। অপর্ণা- সৌমিত্রর রসায়নকে টেক্কা আজও অক্ষম একালের রোমান্টিক জুটি। তারা একসাথে দর্শদকের উপহার দিয়েছে ‘আকাশ কুসুম’, ‘বাক্স বদল’, ‘নিশিমৃগয়া’, ‘বসন্ত বিলাপ’, ‘পারমিতার একদিন’, ‘বসু পরিবার’।
শর্মিলা ঠাকুর :
“খাবার পর একটা করে কথা দিয়েছ”। হাসিমুখে স্ত্রীর আবদার রেখেছিল অপু। সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্টিতে সৌমিত্র শর্মিলা ঠাকুরের এই ছবি আজীবন প্রেমিক প্রেমিকার মনে দোলা লাগাবেই তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। অপরাজিত বাদেও, ক্যামেরার নেপথ্যে গভীর বন্ধুত্ব ছিল দু’জনের। বন্ধুত্বের সেই রসায়ন পরবর্তীকালে হয়ে উঠেছে ‘দেবী’, ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’, ‘বর্ণালী’র ভিত।
সুচিত্রা সেন:
সুচিত্রা সেন (Suchitra Sen)। এই নামের সঙ্গে প্রথম নাম হিসেবে সবসময় উত্তমকুমারের (Uttam Kumar) নামই উঠে আসে।
কেবল একটি সিনেমায় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘সাত পাঁকে বাঁধা’ পড়েছিলেন সুচিত্রা। অসম্পূর্ণ হয়েও সম্পূর্ণতা পেয়েছিল অর্চনা ও সুখেন্দুর ভালবাসা।