বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির (Tollywood) অত্যন্ত উজ্জ্বল এক নক্ষত্র হলেন অপর্ণা সেন (Aparna Sen)। তিনি এমন একজন ব্যক্তি যিনি বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। শুধুমাত্র অভিনেত্রী হিসেবেই নন, পরিচালক, চিত্রনাট্যকার হিসেবেও নজর কেড়েছেন তিনি। নিজের প্রতিভার মাধ্যমেই কোটি কোটি মানুষের মন জয় করে নিয়েছেন। তবে এই অভিনেত্রীর মনেই একটি আক্ষেপ রয়ে গিয়েছে। সেই আক্ষেপ হল ‘মহানায়ক’ উত্তম কুমারের (Uttam Kumar) শেষ ইচ্ছা (Last wish) পূরণ না করার।
অপর্ণা সেন এমন একজন অভিনেত্রী যিনি নিজের সময়কার প্রায় প্রত্যেক সুপারস্টারের সঙ্গে কাজ করেছেন। মহানায়ক থেকে শুরু করে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়- সবার সঙ্গেই স্ক্রিন শেয়ার করেছেন তিনি। ১৯৬১ সালে ‘সমাপ্তি’র হাত ধরে অভিনয় দুনিয়ায় আত্মপ্রকাশ করেছিলেন অভিনেত্রী। এরপর থেকে আর পিছন ফিরে দেখতে হয়নি তাঁকে।
সময়ের সঙ্গেই বাড়তে থাকে অপর্ণার সাফল্য এবং জনপ্রিয়তা। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে একাধিক সুপারহিট সিনেমা। সেই সঙ্গেই প্রচুর আইকনিক ছবির পরিচালনাও করেছেন তিনি। অভিনেত্রী হিসেবে ‘মেমসাহেব’, ‘উনিশে এপ্রিল’, ‘বসন্ত বিলাপ’, ‘একান্ত আপন’, ‘আকাশ কুসুম’ সহ একাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।
যদিও শুধুমাত্র অভিনয়ই নয়, খুব কম বয়সেই পরিচালনা কাজও শুরু করে দিয়েছিলেন অপর্ণা। ‘দ্য জাপানিজ ওয়াইফ’, ’৩৬ চৌরঙ্গী লেন’, ‘ইতি মৃণালিনী’, ‘পারমিতার একদিন’ সহ বহু আইকনিক ছবি পরিচালনা করেছেন তিনি। একইসঙ্গে অভিনেত্রী এবং পরিচালক হিসেবে আকাশছোঁয়া সাফল্য পেয়েছেন অপর্ণা।
‘মেমসাহেব’ অভিনেত্রী এমন একজন নায়িকা ছিলেন যিনি ‘উত্তম সুচিত্রা’ যুগেও ‘মহানায়কের’ সঙ্গে জুটি বেঁধে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছিলেন। সেই সময় উত্তম কুমারের সঙ্গে নায়িকা হিসেবে সুচিত্রা সেনকেই দেখতে চাইত সিংহভাগ দর্শক। কিন্তু সেই সময়ে দাঁড়িয়েও উত্তম কুমারের সঙ্গে ১৪টি সফল ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি।
তবে এই সংখ্যাটা ১৫’ও হতে পারতো। অনেকেই জানেন না, মহানায়কের শেষ ছবি ‘ওগো বধূ সুন্দরী’তে (Ogo Bodhu Sundori) তাঁর স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করার প্রস্তাব প্রথমে অপর্ণাই পেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি দ্বিতীয় লিডে অভিনয় করতে চাননি। তাই সেই সুযোগ ফিরিয়ে দেন অভিনেত্রী। তবে এই ছবিতে অভিনয় করতে করতেই প্রয়াত হন অভিনেতা। অপর্ণার চিরকালের আক্ষেপ, তিনি যদি জানতেন এটি উত্তম কুমারের শেষ ছবি হবে তাহলে কখন ‘ওগো বধূ সুন্দরী’র অফার রিজেক্ট করতেন না।