একসময় বাংলা চলচ্চিত্র মানেই খল চরিত্রে দাপিয়ে বেড়াতেন অভিনেত্রী অনামিকা সাহা (Anamika Saha)। ১৯৭৩ এ ‘আশার আলো’ দিয়ে কেরিয়ার শুরু। ১৯৯৬ পর্যন্ত প্রায় ১৫ টি মুভিতে অভিনয় করেন তিনি। উত্তম কুমারের সঙ্গে করেছেন ‘বাঘ বন্দী খেলা’, ‘দুই পুরুষ’। এমনকি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও গানের দৃশ্যে অভিনয় করেন অনামিকা সাহা। ‘প্রতিশোধ’, ‘বিষে বিষে বিষক্ষয়’ সিনেমায় অনামিকা সাহা কাজ করেছেন চুটিয়ে। ১৯৯৬ পর্যন্ত তিনি ‘মা’ ও ‘শাশুড়ি মা’ চরিত্রে অভিনয় করতেন। ১৯৯৬ তে শেষ অভিনয় তাঁর ‘নাচ নাগিনী নাচ রে’। এরপরেই দীর্ঘদিনের বিরতি নেন।
বড় পর্দার পাশাপাশি অসংখ্য ছোট পর্দাতেও কাজ করেছেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। কিন্তু হালফিলে আর তাঁকে আর পর্দায় দেখা যায়না। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে পুরোনো দিনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বেশ আক্ষেপ করতে দেখা যায় অনামিকাকে। জি বাংলার জনপ্রিয় লক্ষীকাকিমা সুপারস্টার সিরিয়ালের অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্যকে নিয়ে বেশি কিছু কথা এদিন সাক্ষাৎকারে তুলে ধরেছিলেন অভিনেত্রী।
তিনি প্রায় সরাসরিই আক্ষেপ অভিযোগের সুরেই বলেছিলেন, একাধিক অভিনেতার সাথে কাজ করেছেন তিনি। অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্যকে তিনিই হাত ধরে নিয়ে এসেছিলেন অভিনয় জগতে। আজ টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের মধ্যে একজন তিনি। কিন্তু কোথাও অনামিকা সাহার কৃতিত্ব তুলে ধরেননি।অপরাজিতা নাকি এখন তাঁর খোঁজ টুকুও নেন না। যেই অনামিকাকে ‘মামমাম’ বলে ডাকতেন পর্দার লক্ষ্মী কাকিমা, তার সাথে কোনোও যোগাযোগই নাকি রাখেননা অপরাজিতা।
এবার এই অভিযোগের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য। এদিন সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, অনামিকা সাহা যে দাবি করেছেন তিনিই অপরাজিতাকে প্রথম ছবিতে সুযোগ দিয়েছিলেন একথা একেবারেই সত্যি, কেননা সেইসময় অনামিকা সাহা স্বপন সাহার সব ছবিতেই দাপিয়ে কাজ করছেন, এদিকে অপরাজিতা তখন সবেমাত্র ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছেন। অনামিকার অনুরোধেই স্বপন সাহা অপরাজিতাকে ‘শিমুল পারুল’ ছবিতে কাস্ট করেছিলেন।
তবে অনামিকা সাহার কিছু কথায় আপত্তি ও রয়েছে অপরাজিতার। যেমন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী দাবি করেছিলেন, অপিরাজিতাকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য নাকি অভিনেতা প্রসেনজিৎ রাগ করেছিলেন। কিন্তু একথা সত্যি নয়। অপরাজিতার বক্তব্য, তাকে দেখে অনামিকা সাহাকে নিজে প্রসেনজিৎ বলেছিলেন যে ‘আপনি তো সাথে করে মেম নিয়ে ঘুরছেন’।
এরপর অনামিকার সাথে আর কাজ করা হয়নি অপরাজিতার তাই যোগাযোগও খানিক কমেছে। তাই কথা না বাড়িয়ে সরাসরি ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন অপরাজিতা, জানিয়েছেন -”অপরাজিতার কথায়, “উনি আমার মাতৃসম। মায়েরা বরাবরই একটু বেশি অভিমানী হন। যদি আমার কারণে উনি অভিমান করে থাকেন তাহলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। কিন্তু আমি ইচ্ছা করে কিছুই করিনি। উনি আমাকে ভুল বুঝেছেন বলেই আমার খারাপ লেগেছে।”