বাংলা সিনেমা জগতের এক কালজয়ী পরিচালক হলেন অঞ্জন চৌধুরী (Anjan Choudhury)। তাঁর পরিচালিত একের পর এক সুপারহিট সিনেমা সমৃদ্ধ করেছে বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে। আজ থেকে ১৫ বছর আগে ২০০৭ সালে প্রয়াত হয়েছেন অঞ্জন চৌধুরী। বাংলা সিনেমা জগতে তার অবদান অনস্বীকার্য। এমনটা সকলেই জানেন কিন্তু অনেকেই জানেন না অঞ্জন চৌধুরী যে সাফল্য অর্জন করেছিলেন তার পিছনে বিশেষ অবদান রয়েছে একজনের।
তিনি হলেন অঞ্জন চৌধুরীর স্ত্রী স্বয়ং জয়শ্রী চৌধুরী (Jayoshree choudhury)। গতকাল অর্থাৎ ২১ আগস্ট প্রয়াত হয়েছেন অঞ্জন চৌধুরীর স্ত্রী জয়শ্রী চৌধুরী। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। ইকবালপুরের নার্সিংহোমে মাল্টি অর্গান ফেলিওর হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। মৃত্যুর পর তিনি রেখে গিয়েছেন দুই মেয়ে চুমকি (Chumki Choudhury) এবং রিনা চৌধুরী এবং পুত্র সন্দীপ এবং পুত্রবধূ বিদিশা চৌধুরীকে।
প্রসঙ্গত স্বামী অঞ্জন চৌধুরীর সাফল্যের জন্য একটা সময় বহু ত্যাগ করেছিলেন স্ত্রী জয়শ্রী। বাড়ির অমতে এক কাপড়ে পালিয়ে এসে গোপনে বিয়ে করে নিয়েছিলেন অঞ্জন চৌধুরীকে। মা মরা মেয়ে ছিলেন জয়শ্রী। তাই অল্প বয়সে মেয়ের পালিয়ে বিয়ে করার ঔদ্ধত্ব মেনে নিতে পারেননি জয়শ্রীর বাবা। তাই অঞ্জন চৌধুরীর সাথে পালিয়ে বিয়ে করার পর প্রথমে তিনি তাদের সম্পর্কটা মেনে নেননি।
অন্যদিকে সামাজিকভাবে বিয়ে না করায় পরবর্তীতে অঞ্জন দত্ত মায়ের কথা শুনে জয়শ্রীকে কালীঘাটে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিলেন। আর পরবর্তীতে জয়শ্রীর বাবা সেই বিয়ে মেনে নেওয়ায় তাদেরকে নিয়ে আনন্দ করে পার্টি দিয়েছিলেন তিনি। তাই বন্ধুমহলে অঞ্জন দত্ত মজা করে বলে থাকতেন তার তিনবার বিয়ে হয়েছে। সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে সিনেমার চিত্রনাট্যের মতই ফিল্মি অঞ্জন দত্তের প্রেম কাহিনী।
দি ওয়ালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে চুমকি চৌধুরী বলেছিলেন, যে তার মা না থাকলে এবং তার বাবার জন্য মায়ের আত্মত্যাগ না থাকলে তার বাবা আজকে অঞ্জন চৌধুরী হতে পারতেন না। একটা সময় স্বামীর সিনেমা তৈরির নেশার জন্য গা থেকে একটার পর একটা গয়না খুলে দিতেও দ্বিধাবোধ করেননি জয়শ্রী। ইন্ডাস্ট্রিতে জয়শ্রী পরিচিত ছিলেন ঝুনদি নামে। প্রসঙ্গত ক’মাস আগেই চুমকি চৌধুরী হারিয়েছেন নিজের স্বামী সজল ভট্টাচার্যকে। এবার মাও চলে যাওয়ায় একপ্রকার একা হয়ে পড়লেন অভিনেত্রী।