বাংলা সিনেমা (Tollywood) জগতের অন্যতম জনপ্রিয় খলনায়িকা (Villain) হলেন অনামিকা সাহা (Anamika Saha)। একসময় পর্দায় তাঁর খল নায়িকার চরিত্রের অভিনয় দেখে রাগে রাগে ফেটে পড়তেন দর্শকরা। আইকনিক ‘বিন্দুমাসি’ চরিত্র আজও দর্শকদের মনে নাড়া দেয়। তবে একটা সময় বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে দাপিয়ে অভিনয় করে বেড়ালেও বহুদিন তিনি ছিলেন পর্দার আড়ালে। অবশ্য বর্তমানে অভিনেত্রীকে লালকুঠি সিরিয়ালে অভিনয় করতে দেখা যাচ্ছে।
সম্প্রতি কলকাতায় আয়োজিত একটি মানসিক স্বাস্থ্যের ওয়ার্কশপে হাজির হয়েছিলেন অভিনেত্রী। আসলে বিগত মে মাস থেকে একাধিক দুঃসংবাদ মিলেছে টলিপাড়ায়। একাধিক অভিনেত্রীর মৃত্যুর খবর মিলেছিল, যার জন্য অনেক ক্ষেত্রেই মানসিক অবসাদকে দুষছিলেন অনেকেই। তাই নিজেদের সমস্যা মনোবিদদের সাথে ভাগ করে সমাধানের পথ খোঁজার জন্য এই ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয়েছিল।
এদিন অভিনেত্রী নিজেদের সময়ের কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের সামনে অকপট ভাবে ধরা দিয়েছেন। তাঁর মতে, আগেকার দিনে এই মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারটা ছিলই না। তবে লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের একটা কথা বেশ ভালো লাগল। সবাই অডিশন দিচ্ছে, কেউ চান্স পাচ্ছে তো কেউ পাচ্ছেন না। আমাদের সময় তো সব দেখেই শিখতে হত। শুটিং ফ্লোরে বড় শিল্পীদের অভিনয়টা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হত। এদিকে ফ্লোরে বসতে পারাটাই ছিল একটা চ্যালেঞ্জ।
এরপর অভিনেত্রী আরও বলেন, বড় শিল্পীদের অভিনয় দেখার জন্য পরিচালকের পায়ে পর্যন্ত ধরতে হত। বলতাম ‘আমি একটু দেখব যে কিরম করে ওঁরা অভিনয় করেন।’ না হলে আমরা শিখতাম কিভাবে! অভিনেত্রী জ্ঞানেশ মুখোপাধ্যায়ের কাছে চড় পর্যন্ত খেয়েছিলেন। তাঁর ‘ফেরারি ফৌজ’ নাটকে প্রধান চরিত্রে ছিলেন অভিনেত্রী। নাটকের জন্য রিহার্সালের সময় হাতের ঘড়ি পরে যায়। অভিনয় থামিয়ে সেটা তুলতে যান। সেই সময়েই। জ্ঞানেশবাবু তাকে ডেকে বলেন, ‘টেনে গালে একটা থাপ্পড় মারব …। আর বলেছিলেন অভিনয়ের সময় অন্য কোনো দিকে যেন খেয়াল না থাকে।
সেই সময় অভিনেত্রী বলেছিলেন, সেই সময় উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে বাবা একটা সোনার ব্যান্ড দেওয়া ঘড়ি পাঠিয়েছিলেন। সেটাই পরে গিয়েছিলো তাই তুলতে গিয়েছিলাম। এই কথা শুনে সেই ঘড়ি সোফায় ছুড়ে ফেলে দিয়ে ছিলেন জ্ঞানেশবাবু।
এভাবেই সেই সময় কাজ শিখে নিতে হত নিজে থেকেই। তবে এখনকার দিনে অভিনয় শেখাটা বা কাজ দেখাটা অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে। আগের থেকে এখন অনেক অভিনয়ের স্কুল তৈরী হয়ে গিয়েছে। তবে নিজে থেকে শিকার চেষ্টা ও অভিনয়ের প্রতি খিদে না থাকলে সফল হওয়া মুশকিল।