বলিউডের (Bollywood) জনপ্রিয় অভিনেতাদের মধ্যে অন্যতম আমির খান (Amir Khan)। বলিউডের পারফেকশনিস্ট নামেও পরিচিত তিনি। বছরে একাধিক ছবি করেন না তিনি তবে যে ছবি করেন সেটা মনে দাগ কাটার মত। যেমন ‘থ্রি ইডিয়টস’ ছবিটা রিলিজে ওপর প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। তবে আজও ছবিটি গেঁথে রয়ে গিয়েছে দর্শকদের মনে। ছবির রিলিজের আগে গোটা ভারতে প্রচার করেছিলেন আমির খান, সাথে ছিলেন নায়িক যাকারিনা কাপুর। সেই সময় গ্রামের এক তাঁতিকে বন্ধু বানিয়ে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তবে সেই প্রতিশ্রুতি আজও অধরা।
বলিউডের যে কোনো ছবির রিলিজের আগেই প্রচার করা হয়। তেমনই আমির খান নিজের ছবির জন্য প্রচারে কোনো ত্রুটি রাখতে চাননি। গোটা ভারতে ঘুরে ঘুরে চলছিল ছবির প্রচার। সেই সময় মধ্যপ্রদেশের একটি গ্রামের এক তাঁত ব্যবসায়ীর পরিবারের কাছে গিয়েছিলেন আমির কারিনা। অতিথি হিসাবে তাদের যথাসাধ্য আপ্যায়ন করেছিলেন সেই তাঁতি। বদলে তাকে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছিলেন আমির খান। কিন্তু প্রতিশ্রুতি দিলেও সাহায্য করার সময় নাকি আমির খানকেও খুঁজেও পাননি তাঁরা।
ঘটনাটা আজ থেকে ১২ বছর আগের। মধ্যপ্রদেশের চান্দেরি শহরের চট্টগ্রাম প্রাণপুর। সেখানেই বহুকষ্টের মধ্যে দিয়ে তাঁত বুনেই কোনোমতে সংসার চালান কমলেশ। আমির কারিনা যখন তাদের বাড়িতে আসেন তখন তাঁর পরিবারের সকলে ধন্য হয়ে গিয়েছিলেন রীতিমত। কমলেশের স্ত্রী ছেলে মেয়ে সবার সাথে পরিচয় করেন ও তাদের বাড়িতেই তৈরী রুটি তরকারি খান। এরপর যাওয়ার আগে তাদের কিছু কথা দেন।
আমির খান তাদেরকে নিজের ছবি দেখার জন্য আমন্ত্রণ জানান। সাথে যাতায়াতের সমস্ত খরচ তিনিই নেবেন জানিয়ে দেন। তবে এখানেই শেষ নয়, এরপর আমির খান বলেন তিনি মুম্বাইতে একটা শো রুম খোলার ব্যবস্থা করে দেবেন কমলেসকে। যাতে সেখানে নিজের হাতে বোনা তাঁতের শাড়ি বিক্রি করে টাকা রোগজার করতে পারে সে। এমনকি চাইলে আমির কারিনার নামও যুক্ত করতে পারে সেই ব্যবসার সাথে।
এই কথা দিয়ে কমলেশের থেকে দুটো ২৫০০০ টাকার শাড়িও কিনেছিলেন তিনি। জেতার একটা কারিনা কাপুরকে উপহার দেন। আর সাথে নিজের হাতের ‘AK’ লেখা আংটি উপহার হিসাবে দিয়ে যান বন্ধু কমলেশকে। এমন একজন বড়সড় তারকার থেকে সাহায্যের আশ্বাস পেয়ে স্বাভাবিকভাবেই দারুণ খুশি ও আপ্লুত ছিলেন কমলেশ। তবে আজ প্রায় ১২ বছরেও বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু মুম্বাইয়ে শো রুম খুলতে সাহায্য করা তো দূরের কথা! যে ফোন নাম্বার দিয়ে গিয়েছিলেন আমির খান সাহায্য লাগলে ফোন করার জন্য সেটাও কেউ ধরে না।
যখন সাহায্যের প্রয়োজন পড়েছিল তখন পাশে পাননি আমির খানকে। ২০২১ এ করোনাকালে করোনা আক্রান্ত হন কমলেশ, মৃত্যু হয় তাঁর। এরপর অসহায় হয়ে কমলেশের স্ত্রী ছেলে মেয়ের পড়াশোনা চালানো ও সংসার চালানোর জন্য সাহায্য চাইতে আমির খানের সাহায্যের আশা করলেও সেটা আজও অধরাই রয়ে গিয়েছে। বর্তমানে বিড়ি বেঁধে কোনোমতে সংসার চালাচ্ছেন কমলেশের স্ত্রী।