অনন্যা চ্যাটার্জি, (Ananya Chatterjee) নামটা শুনলেই ছোট পর্দার দর্শকদের মনে আসে একটাই নাম তা হলো ‘সুবর্ণলতা’ (Subarnalata)। বাংলা সিরিয়ালের (Bengali Serial) পাশাপাশি সিনেমা জগতেও অত্যন্ত পরিচিত নাম তিনি। নিজের অভিনয় গুণেই একসময় পেয়েছিলেন জাতীয় পুরস্কারের মত সম্মান। কিন্তু এত প্রতিভাবান হওয়া সত্ত্বেও তিনি আমাদের এই ইন্ডাস্ট্রির এমন একজন অভিনেত্রী যাঁর প্রতিভার কদরই করা হয়নি কোনোদিন।
তাই ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর কাজের সংখ্যা হাতে গোনা হলেও তাঁর অভিনীত প্রতিটি চরিত্রই হলো মনে রাখার মত। ছোট পর্দার জনপ্রিয় মেগা সিরিয়াল ‘সুবর্ণলতা’র ব্যাপক সাফল্যের পর এই অভিনেত্রীকে শেষবার ছোট পর্দায় দেখা গিয়েছে, ‘জয় কালী কলকাতা ওয়ালী’ ধারাবাহিকে। অনন্যাকে শেষবার বড়পর্দায় দেখা গিয়েছে বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের ছবি ‘টোপ’-এ।
অন্যদিকে টলিউড অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের সাথে ‘মোহ ও মায়া’ ওয়েব সিরিজেও অভিনয় করেছিলেন অনন্যা। এছাড়া গত বছরেই শোনা গিয়েছিল দীর্ঘ ছয় বছরের অভিনয় জীবনের বিরতি কাটিয়ে অভিনয়ে ফিরেছেন তিনি। অভিনেতা আবির চট্টোপাধ্যায়ের সাথে পরিচালক সুমন মুখোপাধ্যায়ের ‘পুতুল নাচের ইতিকথায়’ শুটিংও শুরু করেছিলে অনন্যা।
তবে ইন্ডাস্ট্রিতে একের পর এক সফল ছবি উপহার দেওয়ার পরেও সেভাবে যোগ্য সম্মান পাননি তিনি। অনন্যা অভিনীত পুরনো সিরিয়ালগুলি বিশেষ করে ‘সুবর্ণলতা’ এবং ‘জয় কালী কলকাতাওয়ালী’র রিপিট টেলিকাস্ট আজও ভালোই টিআরপি দেয়। কিন্তু তিনি কেন অভিনয় জীবন থেকে দূরে সরে গিয়েছেন সেই কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। জানা যায় অভিনয়ে আসার আগে অনন্যা নাচ করতেন মমতা শংকরের নাচের একাডেমিতে।
সেখান থেকেই অভিনয়ের সুযোগ আসে তাঁর কাছে। জানা যায় ‘দিন প্রতিদিন’ ধারাবাহিক দিয়েই অভিনয় জগতে হাতেখড়ি হয়েছিল তাঁর। এরপর অভিনয় করেছেন ‘তিথির অতিথি’, ‘আলেয়া’র মত একাধিক ধারাবাহিকে। পরবর্তীতে অভিনয় করেছেন একাধিক টেলিফিল্মেও। এছাড়া ২০০২ সালে ‘টক ঝাল মিষ্টি’ ছবির হাত ধরেই জগতেও আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল তার।
বড় পর্দায় অনন্যা অভিনীত ‘রাত বারোটা পাঁচ’ ছবি দারুন প্রশংসা কুড়িয়েছিল। পরবর্তীতে ঋতুপর্ণা ঘোষ পরিচালিত ‘আবহমান’ সিনেমায় অভিনয় করে পেয়েছিলেন জাতীয় পুরস্কার। কিন্তু তারপরেও সেইভাবে ইন্ডাস্ট্রিতে কদর না পেয়ে ফিরে এসেছিলেন ছোট পর্দায়। সেখানে সাফল্য অর্জন করেছিলেন অভিনেত্রী।
তবে শুধু কর্মজীবন নয়, এই অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত জীবনও কিন্তু খুব একটা সুখের হয়নি। জানা যায় বিয়ের চার বছরের মাথায় সংসার ভেঙে গিয়েছিল তাঁর। কাজের বিষয়ে একবার অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন ‘বাজে কাজ করার থেকে বই পড়া অনেক ভালো’। অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন পরিচালকদের হাতে পায়ে ধরতে তিনি পারবেন না, তাই অভিনয় জগত থেকে দূরেই ছিলেন।