মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty) নামটাই যথেষ্ট। এক ডাকে তাঁকে চেনে গোটা দুনিয়া। টলিউড (Tollywood) হোক কিংবা বলিউড (Bollywood) উভয় ইন্ডাস্ট্রিতেই নিজের দমে আজ মেগাস্টার তিনি। শূন্য থেকে শুরু করেই আজ সাফল্যের শিখরে বিরাজ করছেন এই দাপুটে অভিনেতা।
এই বয়সে এসেও অভিনয়ের ময়দানে ফুল অন এনার্জি নিয়ে ব্যাটে বলে ছক্কা হাঁকিয়ে চলেছেন সকলের প্রিয় মিঠুন চক্রবর্তী। আজ কলকাতা তো কাল মুম্বাই এনার্জির কমতি নেই এক ফোঁটাও। আজও এই সুপারস্টার বড় পর্দায় আসলে হল ফেটে যায় মুহুর্মুহু হাততালি আর সিটিতে।তবে অভিনেতার জীবনে আজকের এই সাফল্য কিন্তু একদিনে আসেনি। তার জন্য একসময় তিনি কাটিয়েছেন একাধিক নিদ্রাহীন রাত, খেয়েছেন আধপেটা।
তবে আজ চারপাশের বিপুল চাকচিক্যের মাঝেও কিন্তু নিজের শিকড় ভোলেননি মিঠুন। তাই জীবনে যতই সাফল্য আসুক বারে বারে তিনি ফিরে এসেছেন বাংলার বুকে। তাই আজকাল ইন্ডাস্ট্রিতে ঝাঁচকচকে সাফল্যের জগতে পা রাখতেই যারা নিজেদের অতীত ভুলে যান তাদের জন্য মিঠুন একজন প্রকৃত উদাহরণ। আসলে এটাই একজন বড় মাপের শিল্পী হওয়ার বৈশিষ্ট্য।
ইন্ডাস্ট্রিতে তখন তিনি খুবই নতুন। যদিও ততদিনে ‘মৃগয়া’তে অভিনয় করেই জাতীয় পুরস্কার এসে গিয়েছে মিঠুনের ঝুলিতে। কিন্তু সে সময় কত পারিশ্রমিক (Salary) পেতেন আজকের এই মেগাস্টার? শুনলে অবাক হবেন যে কেউ। সম্প্রতি এই বিষয়েই এক সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলেছিলেন বলিউডের এই ডিসকো কিং।
সালটা ছিল ১৯৭৯, বাসু চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত ‘প্রেম বিবাহ’তে অভিনয় করে সে সময় নাকি মাত্র পাঁচ হাজার টাকার পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন। অথচ সেসময় মিঠুনের মেকআপ আর্টিস্টের পারিশ্রমিক ছিল তাঁর থেকে বেশি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অতীতের স্মৃতি হাতড়ে এ প্রসঙ্গে মিঠুন বলেছেন ‘ওই ছবির জন্য আমি পাঁচ হাজার টাকা পাই। আর ওরা পেয়েছিল সাড়ে সাত থেকে আট হাজার মত’।
এখানেই শেষ নয়, অবাক হওয়ার বাকি রয়েছে আরও। মিঠুন জানান সে সময় তিনি ৭৫টাকা দিয়ে একটি ঘরে ভাড়া থাকতেন। তাঁর সম্বল ছিল একটা ট্রাউজার আর দুটো শার্ট। কোন রকমে পায়ের জন্য জুতোটাও যোগাড় করতে পেরেছিলেন তিনি। কিন্তু দুঃখের বিষয় সেসময় ইন্ডাস্ট্রি তাঁকে তখনও আপন করেনি।
একথা জানিয়েই মিঠুনের সংযোজন ‘এক বড় মাপের পরিচালক একবার বলেন আমি যদি হিরো হই, তবে তিনি ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে দেবেন। পরে যদিও আমার সঙ্গে তিনি একটি ছবি করেন। আর সেই ছবিও সুপারহিট হয়। আমি কিন্তু কখনো তাঁকে অশ্রদ্ধা করিনি। পরবর্তীতে মিঠুনের ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায়, ১৯৮২ সালে ‘ডিস্কো’ ড্যান্সার সিনেমা করে।
এই সিনেমাই মিঠুনের কেরিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে দাঁড়ায়। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। সে সময় এই সিনেমা করেই মিঠুন নিজের যোগ্যতায় যে স্টারডাম অর্জন করেছিলেন তা তখনকার দিনে প্রথমসারির তাবড় বলিউড অভিনেতাদের মনে একপ্রকার ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল। আজও কিন্তু বড় পর্দায় মিঠুন ম্যাজিক অব্যাহত। বাংলা এবং হিন্দি উভয় ইন্ডাস্ট্রিতেই বছরভর ঠাসা কাজ তাঁর হাতে। সেই সাথে ছোটপর্দাতেও সামলাচ্ছেন বিচারকের দায়িত্ব।