বাংলা সংগীত জগতের অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র হলেন জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত গায়িকা ইমন চক্রবর্তী (Iman Chakraborty)। আজ থেকে ৭ বছর আগে ২০১৬ সালে ‘প্রাক্তন’ সিনেমার জনপ্রিয় গান ‘তুমি যাকে ভালোবাসো’ গেয়েই পৌঁছে গিয়েছিলেন গোটা বাংলার সঙ্গীত প্রেমীদের মনের মণিকোঠায়।
ওই বছরেই প্রথম টলিউডে ব্রেক পেয়েছিলেন গায়িকা। আজ ইমন অন্যতম সফল একজন গায়িকা। সিনেমায় প্লেব্যাক করার পাশাপাশি বছরভর ঠাসা কাজ থাকে তাঁর হাতে। তবে তাঁর আজকের জীবনের এই সাফল্য কিন্তু রাতারাতি আসেনি। মফস্বল এলাকার এক মধ্যবিত্ত বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি।
তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই কোনদিনই বিলাসিতার মধ্য দিয়ে জীবন কাটানো হয়নি গায়িকার। আর ইমনের জীবনের সবচেয়ে বড় ক্ষতিটা কিন্তু হয়ে গিয়েছিল খুব ছোটবেলাতেই। অল্প বয়সেই মাকে হারিয়েছিলেন তিনি । তারপর থেকেই তাঁর গোটা জগত জুড়ে জুড়ে রয়েছেন বাবা শংকর চক্রবর্তী।
মা মরা মেয়েটা কে নিজের হাতে আগলে রেখেছলেন ইমনের বাবা। মেয়ের যাতে কোন দিক দিয়ে কোনো রকম কষ্ট না হয় সেদিকেই বরাবর নজর রাখতেন বাবা। এমনকি মেয়েকে ঠিক রাখতে তাঁর গান কিংবা পড়াশোনাতেও যাতে ক্ষতি না হয় তার জন্য তাকে সময়মতো সবকিছু যোগান দিতেন তিনি।
এমনও অনেক দিন গিয়েছে যখন ইমনের বাবা সারাদিন শুধু জল খেয়ে পেট ভরাতেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এ প্রসঙ্গে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত গায়িকার বাবা বলেছেন ‘ইমনের জন্য খাবার দাবার সব নিয়ে যেতাম, সকালবেলা বেরিয়েছি রাত্রি ১২টা ১টায় ফিরেছি। ওকে খাইয়েছি কিন্তু নিজে পেটে কিছু দিইনি। জল খেয়ে খেয়ে কাটিয়েছি, যাতে এ কষ্ট না পায়। কারণ ও কষ্ট পেলে গানটা তো আসবে না। ওকে তো আমার ঠিক রাখতেই হবে’।
গায়িকার বাবার কথায় জানা যায় তাঁদের এমনও দিন গিয়েছে যখন নাকি তাঁর কাছে বাড়ি ভাড়া দেওয়ার টাকাটাও ছিল না। কিন্তু এই কষ্টের আঁচ টুকু পড়তে দেননি মেয়ে ইমনের গায়ে। এ সবের কোনও কিছুই তিনি জানতেন না। তাই এদিন বাবার মুখে সব শুনে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন গায়িকা নিজেও।
প্রসঙ্গত ইমনের মা না থাকায় পরবর্তীতে নিজের বাবার আবার বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। একবার জি বাংলার জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো দিদি নাম্বার ওয়ান এর মঞ্চে এসে একথা নিজেই জানিয়েছিলেন গায়িকা। তাছাড়া নিজের শত ব্যস্ততার ফাঁকেও বাবার খেয়াল রাখতে কখনও ভোলেন না গায়িকা।