টলিউড অভিনেত্রী (Tollywood actress) ঐন্দ্রিলা শর্মা (Aindrila Sharma) প্রয়াত হয়েছে দেখতে দেখতে ২ দিন হয়ে গেল। গত রবিবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন অভিনেত্রী। ‘জিয়ন কাঠি’ নায়িকার প্রয়াণের পর আস্তে আস্তে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গিয়েছেন সবাই। কিন্তু তাঁর পরিবারের সময় যেন এখনও রবিবার বেলা ১২:৫৯ মিনিটেই আটকে রয়েছে। তবুও ঐন্দ্রিলার কাছের মানুষরা কথা বলে, চিৎকার করে কান্নাকাটি করে নিজেদের কষ্টটা বের করতে পারেন। কিন্তু অবলা প্রাণীরা তো সেটি পারে না। সেই কারণেই অভিনেত্রীকে হারিয়ে তাঁর সন্তানসম দুই পোষ্য (Aindrila Sharma pets) যেমন সারাক্ষণ গুমরে গুমরে থাকছে।
অবলা হলেও ওঁরা সবটাই বোঝে। বিশেষ করে কাছের কেউ চলে গেলে তা ওঁরা বেশ ভালো করেই বুঝে যায়। ঐন্দ্রিলার সন্তানসম দুই পোষ্য বোজো এবং তোজোও বুঝে গিয়েছে তাঁদের ‘মা’ আর কোনোদিন তাঁদের কাছে ফিরে আসবে না। মুখ ফুটে বলতে না পারলেও ওঁদের কষ্টটা ওঁদের আচরণেই বুঝতে পারা যাচ্ছে।
‘মা’য়ের ডাক, আদর, ভালোবাসা, ছোঁয়া পাওয়ার জন্য সারাক্ষণ আকুল হয়ে বসে রয়েছে বোজো এবং তোজো। খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। চোখের ঘুমও উড়েছে। সম্প্রতি টিভি৯ বাংলার তরফ থেকে ঐন্দ্রিলার বান্ধবী পারমিতা সেনগুপ্তকে বোজো এবং তোজোর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হয়। আর সে কথা বলতে বলতেই অঝোরে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
পারমিতা বলেন, ‘আমরা মানুষরা কথা বলতে পারি। এখন যেমন বলছি। কিন্তু বোজো-তোজোরা তো পারে না। ওঁদের দু’জনের জন্য আমার প্রাণটা ফেটে যাচ্ছে’। জানা গিয়েছে, দু’জনের মধ্যে অফ হোয়াইট রঙের পাগ প্রজাতির বোজো ছিল ঐন্দ্রিলার বেশি ন্যাওটা। ৩ বছর বয়সী বোজো তাই বেশ ভেঙে পড়েছে। অপরদিকে তোজো অভিনেত্রীর দিদি ঐশ্বর্যর বেশি কাছের। তাই সে কষ্ট পেলেও নিজেকে সামলে নিতে পেরেছে।
শোনা গিয়েছে, ২০ তারিখ হাসপাতাল থেকে তাঁদের ‘মা’ ঐন্দ্রিলার দেহ বাড়িতে নিয়ে আসার আফে বোজো ঠিক বুঝতে পেরেছিল। ঐন্দ্রিলার দেহ যখন বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছে তখন দীর্ঘদিনের পরিচারিকার কোলে মুখ গুঁজে কাঁদতে শুরু করেছিল দু’জনে।
গত ১ নভেম্বর ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ঐন্দ্রিলা হাসপাতালে ভর্তি হয়ার পর থেকে বোজো খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিয়েছিল। সারাক্ষণ আনমনে তাকিয়ে থাকত সে। মৃত্যুর পর ঐন্দ্রিলার দেহ যখন বাড়িতে আনা হয়েছিল, তখন দরজায় টোকা পড়তেই ছুটে যায় সে। এরপর মায়ের নিথর দেহের কাছে আনা মাত্রই ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ছোট্ট বোজো। অনেক কষ্টে তাঁকে সরানো হয়েছিল। কে জানে, হয়তো অবলা বোজোও বুঝতে পেরেছিল আর কোনোদিন ‘মা’কে দেখতে পাবে না সে!