কথায় বলে ‘কপালের নাম গোপাল!’ অর্থাৎ কার ভাগ্যে কখন যে কি রয়েছে সেটা বোঝা অসম্ভব। আজ যে ফকির কাল সে রাজা হতেই পারে। আর আজকাকার সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে রাতারাতি ভাইরাল হয়ে অনেকেই রাস্তা থেকে রাজপ্রাসাদে পৌঁছে গিয়েছেন। উদাহরণ স্বরূপ বীরভূমের বাদাম বিক্রেতা ভুবন বাদ্যকরবাবু ‘কাঁচা বাদাম’ গানের জেরে আজ জগৎ বিখ্যাত। পাকা বাড়ি, গাড়ি থেকে আইফোন সবই হয়ে গিয়েছে তাঁর। তবে এবার তাকে চ্যালেঞ্জ দিতে হাজির আরও এক নতুন শিল্পী।
একসময় রাস্তায় ঘুরে ঘুরে কাঁচা বাদাম বিক্রি করতেই বীরভূমের দুবরাজপুরের কুড়ালজুড়ি গ্রামের ভুবনবাবু। আজ তাঁর গান ভাইরাল হওয়ার পর তিন সেলিব্রিটি হয়ে গিয়েছেন। একাধিক মিউজিক ভিডিও থেকে রিয়্যালিটি শোতে দকেহা গিয়েছে তাকে। তাছাড়া গানের দৌলতেই আজ ভাঙা মাটির বাড়ি থেকে পাকা দোতলা স্বপ্নের বাড়ি বানিয়েছেন তিনি। এমনকি চারচাকা গাড়ি ও সম্প্রতি আইফোন পর্যন্ত হাতে এসে গিয়েছে বাদাম কাকুর।
সম্প্রতি ভুবন বাবুর মতনই আরও আরও একজনের গান বেশ ভাইরাল হয়ে পড়েছে। তিনি হলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার নিত্যানন্দপুরের বাসিন্দা মিলন কুমারবাবু। গান গাওয়াই তার পেশা, ছোট থেকেই গরিব পরিবারে বড় হয়েছেন। ছোট বেলা থেকেই গানের প্রতি আকর্ষণ ছিল, বাবার থেকেই শিখেছিলেন গান। প্রথাগত কোনো সংগীত শিক্ষা নেই, তবে যেটুকু শিখেছেন তা মানুষের মন জিতে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
প্রতিদিন রোজ সকালে উঠে বর্ধমান শহরের কাটোয়া লোকালে হাজির হন মিলনবাবু। সেখানেই যাত্রীদের নিজের গান শোনান, তারা খুশি হয় যা দেন তা দিয়েই চলে সংসার। মিলনবাবুর পাকা বাড়ি নেই, বাশ আর ত্রিপল দিয়ে ঘেরা কুঁড়েঘরেই স্ত্রী, বোন, অসুস্থ বাবা মা ও দুই সন্তান নিয়ে তাঁর সংসার। তবে উপার্জন ঠিক মত না হওয়ায় অভাবের মধ্যে দিয়েই দিন কাটছে তার।
তবে দীর্ঘদিন ধরে যাত্রীদের গান শুনিয়ে ইতিমধ্যেই সকলের মনে একটা আলাদা জায়গা তৈরী করে ফেলেছেন তিনি। আর সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে এবার তাঁর গানও ভাইরাল হচ্ছে কম বেশি। গান ভাইরাল হওয়ার পর ভাগ্যের চাকা ঘুরেছে। ধীরে ধীরে ডাক পাচ্ছেন নিজের গানের গলার জন্য। আশা করা যায়, মিলনবাবুও একদিন ভুবন বাদ্যকরের মতই ভাইরাল হয়ে উঠবেন।
প্রসঙ্গত, এক ভিডিও কনটেন্ট ক্রিকেটারের সাথে সম্প্রতি দেখা মিলেছে মিলনবাবুর। গাড়িতে চেপে কলকাতা ঘুরে বেরিয়ে, গঙ্গা ভ্রমণ করে গান গেয়েছেন তিনি। আর মিলন কুমার বাবুর গলায় কিশোর কুমারের এই গানের ভিডিও এখন নেটপাড়ায় ভাইরাল হয়ে পড়েছে। নেতিজ্ঞরাও তার গান বেশ পছন্দ করছেন। হয়তো এবার শীঘ্রই মিলনবাবুর গানে মেতে উঠবে গোটা নেটপাড়া।