ছোটপর্দার অন্যতম জনপ্রিয় নতুন মুখ ‘ত্রিনয়নী’ (Trinayanee) ধারাবাহিকের নয়ন ওরফে শ্রুতি দাস (Shruti Das)। প্রথম ধারাবাহিকেই দর্শকদের বিপুল ভালোবাসা কুড়িয়েছেন এই টেলি নায়িকা। প্রায়শই খবরের শিরোনামেও উঠে আসেন তিনি। ত্রিনয়নী শেষ হওয়ার পর পরই নিজের অভিনয়ের দক্ষতায় ‘দেশের মাটি’ (Desher Mati) ধারাবাহিকে অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে যান তিনি।
কিন্তু এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজ সকলের ভালোবাসা পেলেও, একসময় তার শ্যামলা গায়ের রঙের জন্য কম অসম্ভব অপমানিত হতে হয়েছিল। কাটোয়ার মত মফস্বল থেকে দুচোখ ভরা স্বপ্ন নিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন অভিনেত্রী। একদিকে স্নাতকোত্তর পড়াশোনা, অন্যদিকে মডেল হওয়ার জেদ। এর থেকেই প্রথমবার অডিশন দেন শ্রুতি আর তাতেই ছেঁড়ে তার ভাগ্যের শিকে।
আজ বর্ণবিদ্বেষ আন্দোলন নিয়ে সরব গোটা বিশ্ব। কিন্তু আমাদের চারপাশেই প্রতিনিয়ত আমরা মানুষকে তার দক্ষতা দিয়ে নয় বিচার করি গায়ের রঙ দিয়ে। ফেয়ারনেস ক্রিমের বিজ্ঞাপন, আর বিউটি টিপসে ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া উপায় জানতে নেটিজেনদের আগ্রহ দেখলেই বোঝা যায়, তারা তাদের ‘গায়ের রং’ নিয়ে ঠিক কতটা ভাবিত।
এই বর্ণবিদ্বেষীদের হাত থেকে রেহাই পাননি অভিনেত্রী শ্রুতি দাসও। অভিনয়ে দক্ষতা থাকলেও ইন্ডাস্ট্রিতে গায়ের রং এর কারণে অসংখ্য অপমান গঞ্জনা সইতে হয়েছে অভিনেত্রীকে। এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্রুপের শিকার হলেন ‘দেশের মাটি’ ধারাবাহিকের নোয়া। এই ধারাবাহিকে দিব্যজ্যোতি দত্তের বিপরীতে নোয়ার চরিত্রে অভিনয় করেছেন শ্রুতি। সেই সংক্রান্ত একটি পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতেই অভিনেত্রীর দিকে ধেয়ে আসে নানান বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য।
তার পোস্টের নীচে বাড়তে থাকলো, ‘কুৎসিত, ‘পেত্নী’, ‘কাজের মাসী’ এমন নানান কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য।কিন্তু এসবে ভেঙে পড়ার পাত্রী ‘নোয়া’ নন। তাই তিনি কেবল সবকিছুর জবাবে অল্প কথায় লিখলেন, ‘সব হিসেব তোলা থাকবে’। সম্প্রতি শ্রুতি একটি সাক্ষাৎকারে জানান শুধু আজি নয় আগেও বহুবার এই পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন শ্রুতি৷ একসময় স্বয়ং অভিনেত্রীর প্রাক্তন প্রেমিক তাকে বলেছিলেন, “রোজ কাঁচা হলুদ মাখ, ফর্সা হয়ে যাবি”। কিন্তু প্রতিভা থাকলে তার প্রকাশ যে কেউ আটকাতে পারেনা, আজ তার জ্বলন্ত উদাহরণ শ্রুতি নিজেই।