এক সময় টলি পাড়া কাঁপিয়ে ছিল অভিষেক-ঋতুপর্ণার জুটি। সিনেমার মধ্যে দিয়েই তাঁরা জায়গা করে নিয়েছিল মানব হৃদয়ে। এই জুটির ‘দাহন’ সিনেমা আজও ভুলতে পারেনি বাংলার সিনেমা প্রেমীরা। এমনকি খোদ ঋতুপর্ণা নিজেও ভুলতে পারেনি দাহন সিনেমা তাঁর প্রিয় মিঠুর ( Abhishek Chatterjee ) সেই বিখ্যাত সংলাপ। আজ অভিষেকের প্রয়াণে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত ( Rituparna Sengupta )। জীবনের পাতার সেই পুরানো স্মৃতিকে তুলে ধরেছেন তিনি। বলেছেন, “রাত্রিবেলা। একটা ঘরে মিঠু জোর করে আমার হাত দুটো চেপে গলার কাছে মুখ নামিয়ে আদর করতে চাইছে। আমি প্রতিবাদ করছি। চিৎকার করছি। কেঁপে উঠছি। বাইরে মণ্ডপ থেকে ভেসে আসছে গান। মিঠুর সেই বিখ্যাত সংলাপ। ‘আমি তোমার পুরনো আশিক নই…’ এমনই সংলাপ ছিল। পুরো ঠিক লিখলাম কিনা জানি না। ঋতুদা থাকলে বলে দিতে পারতো।”
ভোরের দিকে খবর আসে, মৃত্যু হয়েছে বাংলা টেলিভিশনের বিখ্যাত অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁর মৃত্যুতে যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে সিনে পাড়ায়। বিষণ্ণতা কুরে কুরে খাচ্ছে শিল্পীর পরিবার-বন্ধু ও অনুরাগীদের। তাঁর এই মৃত্যুকে যেন মন থেকে স্বীকার করতে রাজি নন কেউই। কিন্তু বাস্তবকে যে অবহেলা করা অসম্ভব। তাঁর মৃত্যুকে কিছুতেই মেনে নিতে রাজি নন ঋতুপর্ণা।
এদিন তিনি বলেন, “সেই কবে থেকে আমাদের সম্পর্ক। সেই মিঠু কীভাবে চলে গেল আমাদের ছেড়ে? টিভির পর্দায় দেখে বুঝতাম শরীরের বিশেষ যত্ন নেয় না সে। ঘুম-খাওয়া কিছুই সময় মতো নয় তাঁর। বরাবর খুব বেশি জেদ। নিজের যা ভালো বুঝবে তাই করবে। আসলে, অনেক না পাওয়ার ক্ষোভ। আর সেই বিষণ্ণতাতেই নিজের ক্ষতি করে গেছে অজান্তেই।”
নিজেদের পুরানো স্মৃতিগুলির কথা মনে করে মুছড়ে পড়েন অভিনেত্রী। তাঁদের সেরা জুটি যে আর রইল না। গোটাটাই পড়ে রইল স্মৃতি আঙিনায়। বিধ্বস্ত অবস্থাতেই তিনি বলেন, প্রসেনজিতের পরে সবচেয়ে বেশি ওর সঙ্গে কাজ করেছি। আমাদের জুটি তো সুপার ডুপার হিট! তখন যেখানেই যেতাম লোকে আমাদের কথা বলত। একসঙ্গে দেখতে চাইত।” স্মৃতির পথে হাঁটতে হাঁটতেই যেন মন খারাপ করে বসেন তিনি। তাঁর প্রিয় বন্ধু মিঠুর এত অল্প বয়সে মৃত্যুকে যেন কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তিনি। তাঁর মনে পড়ে যাচ্ছে এক সঙ্গে কাটানো সেই সকল মুহূর্ত গুলোর কথা। মনে পড়ছে হাসি-মজার দিনগুলো। বন্ধুর সঙ্গে কাটানো সব স্মৃতি গুলো।