গতকাল অর্থাৎ রবিবারের সকালটা ছিল অনান্য রবিবারের থেকে এক্কেবারে আলাদা। চোখের জল মুছতে মুছতেই দিন শুরু হয়েছে গোটা দেশবাসীর। ভারতের কোকিলকন্ঠী বর্ষীয়ান সঙ্গীতশিল্পীর লতা মঙ্গেশকরের (Lata Mangeshkar) প্রয়াণে শোকে মুহ্যমান গোটা সংগীত জগত। সুরসাম্রাজ্ঞী তথা ভারতীয় নাইটেঙ্গেলের প্রয়াণে সুরের জগতে যে শূন্য স্থান তৈরি হয়েছে, তা এককথায় অপূরণীয়।
লতাজির প্রয়াণে গভীরভাবে শোকাহত অস্কারজয়ী সংগীত পরিচালকে এ আর রহমান (A. R. Rahman)। গানের জগতে যাঁকে স্বয়ং দেবী সরস্বতীর আসনে বসিয়েছিলেন, সেই কিংবদন্তী গায়িকার প্রয়াণে স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে গলা বুজে এসেছে স্বয়ং গানের জাদুকরেরও।জলে ভেজা ঝাপসা চোখে স্মৃতি হাতড়ে প্রিয় লতাদিদির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে গিয়ে জানালেন নানান অজানা কথা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিওতে লতাজি সম্পর্কে এ আর রহমান গতকাল বলেছিলেন “আজ বড় কঠিন একটা দিন। লতাজি শুধুমাত্র আইকন নন, ভারতীয় সংগীত, সাহিত্য-কবিতার একটা অংশ উনি। এই শূন্যতা চিরকালের জন্য রয়ে যাবে আমাদের মধ্যে।হিন্দুস্তানি মিউজিক, উর্দু-বাংলা কবিতা, আরও অনেক ভাষাতেই সাবলীল ছিলেন লতা মঙ্গেশকর।” লতাজির কথা বলতে বলতে স্মৃতির সরণী বেয়ে এই সংগীত স্রষ্টা একসময় পৌঁছে যান নিজের ছোটোবেলার দিনগুলোতে।
তিনি জানান লতাজির সাথে কীভাবে ওতোপ্রতোভাবে জড়িয়ে রয়েছে তাঁর বাবার স্মৃতি। এপ্রসঙ্গে ধরা গলাতেই তিনি বলতে শুরু করেন “বাবার কথা মনে পড়ছে খুব। উনি আমার ঘরে লতাদিদির একটি ছবি রেখেছিলেন। একটা সময় ছিল, ঘুম থেকে উঠে রোজ সকালে লতাদিদির ছবি দেখতাম আমি। আর নিজেকে অনুপ্রেরণা জোগাতাম। রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে, ওঁর মুখ দেখেই আমি রেকর্ডিংয়ে যেতাম।” সেইসাথে সঙ্গীত পরিচালক বলেন “আমি ভাগ্যবান যে, ওঁর সঙ্গে বেশ কয়েকটা গান রেকর্ড করার সৌভাগ্য হয়েছে আমার।বহুবার ওঁর শোয়েও অংশগ্রহণ করেছি।”
View this post on Instagram
এরপরেই তিনি জানান কী ভাবে লতাজি এ আর রহমানের কেরিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন।একটু থেমে,ধরা গলাতেই তিনি বলতে শুরু করলেন, “মিউজিক কম্পোজার হিসেবে আমি কখনওই আমার গায়ক সত্ত্বাকে গভীরভাবে নিতাম না। কিন্তু একটা ঘটনা আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। একবার আমি লতাজির জন্য বেশ কয়েকটা গান কম্পোজ করেছিলাম। ভোর ৪টের সময় দেখলাম, উনি নিজের ঘরে সেই গান প্র্যাকটিস করছেন। অত ভোরে! আর সেদিনের সেই একটা ঘটনাই আমার জীবন পুরো বদলে দিয়েছে।”