দেশব্যাপী দক্ষিণী সিনেমার রাজকীয় উত্থানের অন্যতম প্রধান কান্ডারি হলেন জনপ্রিয় পরিচালক এস এস রাজামৌলি (SS Rajamouli)। ২০১৫ সালে রাজামৌলি পরিচালিত প্রথম প্যান ইন্ডিয়া সিনেমা ‘বাহুবলী'(Bahubali)-র হাত ধরে ঘুচে গিয়েছে আঞ্চলিক ভাষার ব্যাবধান। যার ফলে হিন্দি বলয়েও বক্স অফিসের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে সাউথের সিনেমাগুলি। তাই রাজামৌলির বাহুবলী থেকে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল সম্প্রতি মুক্তি প্রাপ্ত আর আর আর (RRR) -এও সেই ধারা অব্যাহত।
রাজামৌলির ঝুলিতে এই সাফল্য শুধুমাত্র ভাগ্যের জোরে কিংবা রাতারাতি আসেনি। তাঁর কঠোর পরিশ্রম আর সিনেমার প্রতি অগাধ ভালোবাসাই তাকে আজ সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দিয়েছে। প্রসঙ্গত সম্প্রতি রাজামৌলি পরিচালিত ঐতিহাসিক গাথা ট্রিপল আর বক্স অফিসে ১০০০ কোটির ক্লাবে ঢুকে পড়েছে। অন্যদিকে রাজামৌলি পরিচালিত বাহুবলি ২ ইতিপূর্বে বক্স অফিসে ১৭০০ কোটির বিরাট ব্যাবসা করেছে। যা নিঃসন্দেহে ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে বিরাট রেকর্ড।
তবে একের পর ব্লকবাস্টার হিট সিনেমা উপহার দেওয়ার পাশাপাশি রাজামৌলির সিনেমার সাথে বেশ কিছু নেতিবাচক মিথও জড়িয়ে রয়েছে। বলা হয় রাজামৌলির সিনেমা মুক্তির পর সেই সিনেমার অভিনেতারা সারা দেশে বিপুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। রাতারাতি তাদের কদর বেড়ে যায়। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এটাই রাজামৌলির সাথে প্রথম ছবি করার পর বিরাট সাফল্য মিললেও সেই অভিনেতাদের পরবর্তী ছবি বক্স অফিসে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ে।
রাজামৌলির সিনেমার সাথে জড়িত এমন আশ্চর্যজনক মিথের সবচেয়ে উজ্জ্বল উদাহরণ হলেন সাউথের জনপ্রিয় সুপারস্টার প্রভাস এবং রাম চরণ।উল্লেখ্য ২০১৫ সালে ‘বাহুবলী’ ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর, প্রভাস রাতারাতি প্যান ইন্ডিয়ার সুপারস্টার হয়ে ওঠেন। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘বাহুবলী ২’ এর হাত ধরে সাফল্যের সপ্তম স্বর্গে পৌঁছান অভিনেতা। এই সিনেমার দুবছর পরেই মুক্তি পায় ‘সাহো, এই ছবি থেকে লাভের মুখ দেখা তো দূরের কথা কোনো রকমে ৪৫০ কোটির ব্যবসা করে সিনেমাটি। এছাড়া সদ্য মুক্তি প্রাপ্ত ‘রাধে শ্যাম’ ছবি ঘিরে দর্শকদের ব্যাপক প্রত্যাশা থাকলেও এই ছবিটি মাত্র ১৫০ কোটির বক্স অফিস কালেকশন করেছে সিনেমাটি যা সিনেমার বাজেটের অর্ধেক।
একইভাবে সিনেমা ফ্লপ করেছে দক্ষিণী সিনেমার সুপারস্টার রামচরণেরও। ‘আরআরআর’ মুক্তির পাঁচ সপ্তাহ পর তার তেলেগু ছবি ‘আচার্য’ মুক্তি পেয়েছিল। ১৪০ কোটি বাজেটের এই সিনেমা ছবি তৈরির খরচ তুলতেই রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে। এখন পর্যন্ত এই ছবি আয় করেছে মাত্র ১০০ কোটি। কিন্তু এই ঘটনার আসল কারণ কি! সিনেমা বিশেষজ্ঞদের মতে এর অন্যতম কারণ রাজামৌলি নিজেই। আসলে রাজামৌলির মত রিস্ক নিয়ে বিরাট অঙ্কের বাজেটে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, কৌশল, কিংবা বিষয়বস্তু নিয়ে সিনেমা তৈরির সাহস অন্য কোনো পরিচালকের নেই। এছাড়া এর দ্বিতীয় কারণ টি হল বাহুবলী কিংবা আর আর আর এর মত সিনেমা থেকে সুপারস্টার যে ইমেজ টা আগে থেকেই দর্শকদের মনে তৈরি হয়েছে দর্শকরা তাদের পরবর্তী সিনেমায় তার ছিটেফোঁটাও পাননি।