২০২০ সালের শেষের দিক থেকেই একেরপর এক নক্ষত্রহারা হয়েছে টলিউড (Tollywood)। ছেড়ে গেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, মনু মুখোপাধ্যায়ের মতো প্রবাদপ্রতিম সমস্ত অভিনেতারা৷ মৃত্যুকালে অভিনেতা মনু মুখোপাধ্যায়ের বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। মৃণাল সেনের ‘নীল আকাশের নীচে’ ছবি দিয়ে সিনেমায় অভিষেক তাঁর। এরপর সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক সহ বাংলার তাবড়-তাবড় পরিচালকদের ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। মৃগয়া, জয়বাবা ফেলুনাথ, গণশত্রু ছাড়াও সাহেব, প্রতিদান-সহ একাধিক বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। ছোট পর্দাতেও নিয়মিত দেখা যেত তাকে। দেখতে দেখতে ২ বছর হতে চলল মনু মুখোপাধ্যায় নেই।
আর অদ্ভুত ভাবে কালের নিয়মে কেউ চলে যাওয়ার সাথে সাথে তার স্মৃতির উপরেও ধুলো জমতে শুরু করে। ঠিক যেমন ভাবে মনু মুখোপাধ্যায়কেও ভুলতে বসেছে সকলেই। গত ১ লা মার্চ ছিল বর্ষীয়ান অভিনেতার জন্মদিন। তিনি মনু মুখার্জি নামে পরিচিত হলেও তার আসল নাম ছিল সৌরেন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায়।
গ্ল্যামার দুনিয়ায় কোনোওদিনই পা রাখেননি তিনি। তার পরিচয় বলতে এক গাল সারল্যে ভরা হাসি, আর তীক্ষ্ণ দুখানি চোখ। পর্দায় আর তাঁকে দেখতে না পাপ্যার আফসোস বাঙালির এ জন্মে যাবেনা। বাংলা ছবির অন্যতম নক্ষত্র ছিলেন তিনি। সম্প্রতি, সৌমিত্র ও স্বাতীলেখা অভিনীত শেষ ছবি ‘বেলাশুরু’-র ট্রেলার লঞ্চ হয়েছে। প্রয়াত দুই অভিনেতাকে ফের একবার বড় পর্দায় দেখতে পাওয়ার সৌভাগ্য হওয়ায় যারপরনাই খুশি বাঙালি৷
এবার আরও এক প্রতিভাধর অভিনেতা মনু মুখোপাধ্যায়কে শেষ বারের মত দেখা যাবে বিড় পর্দায়। মনু মুখার্জী অভিনীত শেষ ছবি ‘ভটভটি’ খুব তাড়াতাড়ি মুক্তি পেতে চলেছে। টেলিপাড়ার জনপ্রিয় মুখ তথাগত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত এই ছবির শ্যুটিং শেষ হয়েছিল ২০১৯ সালেই। মনু বাবু ২০২০ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চলে যান। তখন কে জানত, এটিই তার শেষ কাজ হতে চলেছে! ভটভটি’-র পরিচালক তথাগত মুখার্জী জানিয়েছেন, মনু বাবু এত বার্ধক্যে দাঁড়িয়ে ঠিক কতটা তারুণ্যে ভরপুর ছিলেন।
তথাগত এদিন একটি লম্বা পোস্টে মনু মুখোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গে লিখেছেন, বাড়িতে ধূমপান বারণ থাকায় সেটে তার থেকে চেয়ে লুকিয়ে সিগারেট খেতেন মনু বাবু। তথাগতও অভিভাবকের মতো কখনোই তার আবদার মেনে নিতেন না। এই প্রসঙ্গে পরিচালকের আক্ষেপ, “ছবি মুক্তি পাবে, কিন্তু মনু দা নেই। নিজের অভিনয় দেখার সুযোগটুকুও পেলেন না তিনি”।