কত ফেলুদা এলো গেল কিন্তু স্রষ্টা সত্যজিৎ রায়ের (Satyajit Ray) চরিত্র চিত্রনকে টেক্কা দেওয়া তো দূর ধারে কাছে আসতে পারেনি কোনোও পরিচালক। তিনি একাধারে পরিচালক, লেখক, ডিজাইনার, সুবক্তা, সমস্তটাই। আজও তাঁর নাম ভাঙিয়েই তো সারা বিশ্বের কাছে কলার তোলে বাঙালি। তাঁরই এক অনবদ্য সৃষ্টি ‘সোনার কেল্লা’ (Sonar kella)। মুক্তির পর প্রায় কয়েক দশক কেটে গেলেও এই ছবি পুরোনো হয়নি, আর জোর দিয়ে বলাই যায় হবেওনা। এই ছবির মাধ্যমেই প্রিয় গোয়েন্দা চরিত্র ‘ফেলুদা’কে খুঁজে পেয়েছে বাঙালি।
ছবিতে খুব গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সমকালের জনপ্রিয় অভিনেতা কুশল চক্রবর্তী (Kushal Chakraborty)। ছবিতে জাতিস্মর মুকুলের চরিত্রে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছিলেন তিনি। সম্প্রতি তাকে দেখা যাচ্ছে জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘সর্বজয়া’য় দেবশ্রী রায়ের স্বামীর চরিত্রে। কিন্তু কেরিয়ারে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে এলেও, আজও তার গর্ব করার মত চরিত্র ওইটিই।
সম্প্রতি ‘দাদাগিরি’ র মঞ্চে উপস্থিত হয়েছিল সর্বজয়া ধারাবাহিকের গোটা টিম। আর হাতের সামনে সোনার কেল্লার মুকুলকে পেয়েই সত্যজিৎ রায়ের সাথে কুশলের কাজের অভিজ্ঞতা জানতে চান সৌরভ গাঙ্গুলি। আর এমন লোভনীয় প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সুযোগ হাতছাড়াও করেননি কুশল।
অভিনেতা জানান, সোনার কেল্লায় অভিনয়ের সময় তার বয়স ছিল মাত্র ৫। ছোট থেকেই তার আগ্রহ ছিল থিয়েটারে। অভিনেতার বাবাও ছিলেন থিয়েটার শিল্পী। তিনিই ছোট্ট কুশলকে হাত ধরে নিয়ে গিয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়ের কাছে। ওমন প্রবাদপ্রতিম লোকটার সামনে দাঁড়িয়ে সেদিন ছোট্ট কুশল অভিনয় করে দেখাতেও প্রস্তুত ছিলেন আর এই কথা শুনে বেশ অবাকই হয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়। এমনকি পরিচালকের সামনে সেদিন অভিনয় করেও দেখিয়েছিলেন ৫ বছরের কুশল।
কলকাতা ও রাজস্থান মিলিয়ে শুট হয়েছিল। রাজস্থানে যখন শুটিং হয় তখন শীতকাল। সবাই সোয়েটার, মাংকি ক্যাপ পরে শুট করেছেন। এদিকে কলকাতায় তখন চাঁদি ফাটা গরম। কিন্তু সামঞ্জস্য রাখতে সোয়েটার পরেই করতে হয়েছিল শ্যুটিং।
ছবির শেষের দিকে সোনার কেল্লার মধ্যে মুকুলের কাঁদার একটি দৃশ্য ছিল। সেটি কিন্তু রাজস্থানে নয়, শুট হয়েছিল কলকাতায়! তাই সোনার কেল্লার সেট বানাতে সেই সময় বেশ মোটা অঙ্কের টাকাই খরচ হয়েছিল। সত্যজিৎ কুশলকে সেই সময় জিজ্ঞেস করেছিলেন তুমি পারবে তো? কুশল বলেন, “এখন বলতে গেলে হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে যেত। কিন্তু তখন বলেছিলাম, হ্যা পারব। তুমি বানাও।”