সত্যিই, সময় কেমন জলের মতো কেটে যায়! এরই মধ্যে টলিউড অভিনেতা অভিষেক চ্যাটার্জীর মৃত্যু হয়েছে এক সপ্তাহ হতে চলল। কিন্তু মৃত্যু মানেই তো শূন্যতা, যা প্রিয়জনদের মনের মধ্যে তৈরি করে গভীর ক্ষত। টলিউড হার্টথ্রব অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের (Abhishek Chatterjee) অকালমৃত্যুও তেমনি। এখনও পর্যন্ত কেউই মেনে নিতে পারছেন না অভিষেক চট্টোপাধ্যায় আজ আর আমাদের মধ্যে নেই।
গত সপ্তাহের বুধবার গভীর রাতে সবাইকে কাঁদিয়ে নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন এই জনপ্রিয় অভিনেতা। মাত্র ৫৭ বছর বয়সে অভিনেতার এমন আকস্মিক মৃত্যু এক গভীর শূন্যতা তৈরি করেছে গোটা বাংলার বিনোদন জগতে, যা এককথায় অপূরণীয়। বুধবার স্টার জলসার নতুন রিয়ালিটি শো ইসমার্ট জোড়িতে স্ত্রী সংযুক্তার সাথে শুটিং ফ্লোরে গিয়েছিলেন অভিনেতা। সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন অভিনেতা।
সেসময় শুটিং ইউনিটের লোকজনই ধরাধরি করে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে গিয়েছিলেন অভিনেতাকে। কিন্তু অনেক বুঝিয়েও হাসপাতালে ভর্তি করানো যায়নি তাঁকে। আর এটাই এখন হয়ে দাঁড়িয়েছে সবচেয়ে বড় আফসোসের বিষয়। কারণ হাসপাতালে ভর্তি হলে অন্তত চিকিৎসা টুকু শুরু করা যেত, এভাবে অকালে বাংলার দর্শক হারিয়ে ফেলতেন না এমন প্রতিভাবান এক শিল্পী কে।শেষ মুহূর্তে অভিষেকের পাশেই ছিলেন তাঁর স্ত্রী সংযুক্তা চট্টোপাধ্যায় ও মেয়ে ডল।
অভিনেতার মৃত্যুর পর সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু থেকে শুরু করে সংবাদমাধ্যম সর্বত্র শোক প্রকাশ করেছেন ইন্ডাস্ট্রির একাধিক খ্যাতনামা অভিনেতা,অভিনেত্রী। এবার অভিষেক চ্যাটার্জীর মৃত্যু নিয়ে মুখ খুললেন তাঁর দীর্ঘদিনের সহ অভিনেত্রী তথা জনপ্রিয় অভিনেতা সুখেন দাসের মেয়ে পিয়া সেনগুপ্ত। একসঙ্গে প্রায় ১০-১২টি ছবিতে কাজ করেছেন তারা দুজনে। ‘দাদার আদেশ’, ‘মায়ের আঁচল’, ‘ঘর জামাই’-এর মতো অজস্র হিট ছবিতে কখনও নায়িকা কখনও আবার অভিষেকের বোনের চরিত্রেও অভিনয় করেছেন তিনি। তপন দত্তের ‘মায়া জালের খেলা’ ছবিতে শেষবারের মতো একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল তাঁদের।
অভিনেত্রী তথা ইম্পা প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন ‘ আমি আতঙ্কে আছি। এখনও মেনে নিতে পারছি না অভিষেক আর নেই’। সেইসাথে অভিনেতার চিকিৎসা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছেন,’শুনেছি ও নাকি শেষ মুহূর্তে হাসপাতালে হতে চাইনি। ওকে নাকি ডাক্তারও হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেছিল। ও বলল যাবে না। আর ওর এই দাবি সবাই শুনল। আশ্চর্য! অসুস্থ মানুষ মানেই রোগী। রোগীর কথা শোনা হয় নাকি এই সবক্ষেত্রে! জোর করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত ছিল ওকে। কেউ নিয়ে গেল না। না শুটিং লোকের লোকজন, না পরিবারের কেউ। বড্ড অবহেলা হয়ে গিয়েছে। সেদিন যদি বাড়িতে না নিয়ে গিয়ে শুটিং ফ্লোর থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হত, অভিষেক আজ আমাদের মধ্যে থাকত এভাবে চিরদিনের মতো চলে যেত না’।