মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty) নামটাই যথেষ্ট, আলাদা করে তাঁর আর পরিচয় দেওয়ার প্রয়োজন নেই। বাংলা থেকে হিন্দি উভয় সিনেমা জগতেই ৭১বছর বয়সেও অব্যাহত মিঠুন ম্যাজিক। নাম, যশ, অর্থ, প্রভাব, প্রতিপত্তি থেকে শুরু করে কী নেই তাঁর কাছে। সেইসাথে রয়েছে দেশজোড়া খ্যাতি। তবে এই সাফল্য অভিনেতার জীবনে রাতারাতি আসেনি। তার জন্য একসময় কঠিন লড়াইয়ের মধ্যে দিয়েই জীবনের অনেক চড়াই উতরাই পেরোতে হয়েছে অভিনেতাকে।
বলা হয় তারা বলে, “আত্মবিশ্বাস এবং কঠোর পরিশ্রমই হল জীবনে সফল হওয়ার মূল চাবিকাঠি। এর কোনো বিকল্প হয় না। আর তার অন্যতম উদাহরণ হলেন আশির দশকের সুপারস্টার তথা বলিউডের ডিস্কো ডান্সার মিঠুন চক্রবর্তী। অত্যন্ত সাধারণ পরিবার থেকে আসা এই অভিনেতা বলিউডে পাকাপাকিভাবে নিজের জায়গা তৈরি করার জন্য একসময় অনেক সংগ্রাম করেছেন। স্টারডম দেখার আগে,একজন সাধারণ মানুষের মতোই জীবনযাপন করতেন তিনি এবং দারিদ্রতা কি জিনিস তা খুব কাছ থেকে অনুভব করেছেন অভিনেতা।
জানা যায় হায়দ্রাবাদে জন্মগ্রহণকারী মিঠুন চক্রবর্তীর আসল নাম গৌরাঙ্গ চক্রবর্তী। কলকাতার বিখ্যাত স্কটিশ চার্চ কলেজে অধ্যয়ন করেন যেখান থেকে তিনি রসায়নে ডিগ্রি লাভ করেন। পরবরৃতীকালে তিনিই হয়ে ওঠেন বলিউডের ‘ডিস্কো ড্যান্সার’। তবে এই জার্নিটা এতটা সহজ ছিল না। ছোটবেলা থেকেই নাচের প্রতি এক অদ্ভুত ভালোবাসা ছিল অভিনেতার। তাই নিজের স্বপ্নকে বাস্তবের রূপ দিতে একসময় মায়া নগরী মুম্বাই পাড়ি দেন অভিনেতা।
আর এই স্বপ্নের শহরে পৌঁছানোর সাথে সাথেই শুরু হয় তার সংগ্রাম। জানা যায়, প্রথম দিকে মুম্বাইতে তার থাকার বা ঘুমানোর জায়গাও ছিল না। কিন্তু তিনি স্বপ্ন দেখা ছাড়েননি। জানা যায় সিনেমায় আসার আগে , তিনি স্টেজ শো করে অর্থ উপার্জন করতেন। পরে তিনি ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া, পুনে থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে ‘মৃগয়া’ ছবিতে অভিনয় বলিউডে অভিষেক হয় মিঠুন চক্রবর্তীর।
বর্তমানে জনপ্রিয় রিয়ালিটি শো ‘হুনারবাজ-দেশ কি শান’-এ বিচারকের আসনে দেখা যায় মিঠুন চক্রবর্তীকে। কিছুদিন আগে এই মঞ্চে এক প্রতিযোগিকে উৎসাহ দিতে গিয়ে নিজের জীবনের সংগ্রামের দিনগুলির কথা বলেছিলেন অভিনেতা। তিনি বলেন “আমি ভেবেছিলাম কেউ আমাকে নায়ক হিসাবে কাস্ট করবে না, তাই আমি ভিলেন হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমি কাজে যাওয়ার জন্য পায়ে হেঁটেই যেতাম যাতে আমি টাকা বাঁচাতে পারি। আমি বড় পার্টিতে নাচতাম কারণ আমি খাবার পেতাম।” সেইসাথে অভিনেতার আরও সংযোজন, “আমি তোমাকে লেকচার দিচ্ছি না ‘বাচ্চা নিজের স্বপ্নকে এতটা বাধ্য করে দাও যাতে সেও লজ্জা পেয়ে যায়।”