টলিউড বলিউড তথা গোটা বিনোদন জগত জুড়েই যেন কার্যত কারোর অভিষাপ লেগেছে৷ একের পর এক শিল্পীর মৃত্যুতে গোটা দেশ জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া৷ সঙ্গীত জগত, নাট্য জগত তথা নৃত্য শিল্পীদের তাবড় তাবড় মহারথীদের মৃত্যুর পর গত বুধবার মধ্য রাতে মাত্র ৫৮ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন টলিউড অভিনেতা অভিষেক চ্যাটার্জি (Abhishek Chatterjee)।
তাঁর মৃত্যু সংবাদ যেন এক প্রকার নাড়িয়ে দিল বাংলার সিনে পাড়াকে। একটি রিয়েলিটি শো-এর শুটিং সেটেই আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরপর সেখান থেকে কোনও মতে বাড়িতে ফেরেন তিনি। বাড়িতেই স্যালাইনের ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। কিন্তু তারপর আর শেষরক্ষা হল না। বৃহস্পতিবার ভোর নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর।
তাঁর মৃত্যুতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন টলিউডের সব প্রথম সারির তারকারা। কিন্তু এবার অভিনেতার মৃত্যুর পর প্রায় তিন দিনের মাথায় মুখ খুললেন টলিউডে অভিষেকের সমকালীন প্রয়াত অভিনেতা তাপস পালের (Tapas Pal) স্ত্রী নন্দিনী পাল (Nandini Pal)।
মাত্র কয়েক বছর হল স্বামীকে হারিয়েছেন তিনি। এবার তিনি হারালেন খুব কাছের অভিষেককে৷ সম্পর্কে নন্দিনীর দেওর হত অভিষেক। সকলে তাকে মিঠু দা বলে ডাকলেও, নন্দিনীর কাছে তিনি ছিলেন ‘মিঠাই’। তাপসের সাথে রক্তের সম্পর্ক না থাকলেও তারা ছিল দুই ভাই।
তাপস পালের সংসারে অভিষেকের আবদারের শেষ ছিলনা। আর নন্দিনী বৌদির কাছে তো বায়নার শেষ রাখতেন না মিঠাই৷ নন্দিনী যখন কন্যা সোহিনী (Sohini Pal)-কে স্কুল থেকে আনতে যেতেন, কখনও কখনও জেদ করে অভিষেক তাঁর সঙ্গী হতেন। সোহিনীর ছুটির দেরি হলে দাঁড়িয়ে থাকতেন স্কুলের গেটের সামনে। স্কুল থেকে ফেরার পথে অভিষেককে ইংরেজি গানের সিডিও কিনে দিতেন তিনি।
তাপস বাড়িতে না থাকলেও অভিষেক নন্দিনীর কাছে আবদার করতেন রান্না করে খাওয়াতে হবে৷ যত রাতই হোক বাড়ি ফিরে কাতলা মাছের ঝোল রাঁধতে হয়েছিল নন্দিনীকে। আলু, ফুলকপি দিয়ে পাতলা মাছের ঝোল ছিল অভিষেকের খুব প্রিয়। বেশি মশলাদার রান্না পছন্দ করতেন না। এতসব স্মৃতি মনে করেই আজ নন্দিনীর মনে হয়, অভিষেক ও তাপস দুজনেই ছিলেন আবেগপ্রবণ। অঙ্ক কষে ইন্ডাস্ট্রিতে চলতে শেখেননি তাঁরা। ফলে ইন্ডাস্ট্রির রাজনীতি বুঝতে পারেননি। তবে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সৎ ভাবে অভিনয় করেছেন তারা, এই নন্দিনীর স্বস্তি।