বাপ্পি লাহিড়ী (Bappi Lahiri), নামটা শুনলেই চোখের সামনে ভেসে আসে সোনার গয়নার মোড়া বাপ্পি দা। হাতের প্রতিটা আঙুলেই সোনার আংটি, গলায় একাধিক সোনার চেন সাথে গা ভরি সোনা। এছাড়াও চোখে সর্বদাই থাকত একটা কালো সানগ্লাস। সকলেই তাকে ‘দ্য গোল্ডেন ম্যান’ নামে ডাকত। আসলে সোনা শুধুই শখ ছিল না ভালোবাসতেই সোনা সংগ্রহ করতে। সেই কারণেই শেষ যাত্রাতেও সঙ্গী ছিল প্রিয় সোনার চেন।
বিগত ১৫ই ফেব্রুয়ারি সকলের চোখ জলে ভিজিয়ে চলে গিয়েছেন বাপ্পি লাহিড়ী। তাঁর চলে যাওয়া আজও অনেকেই মেনে নিতে পারেননি। বাংলার ‘ডিস্কো কিং’ এর চলে যাওয়ার খবরে শোকে ভেঙে পড়েছিলেন সঙ্গীতানুরাগীরা। তবে তাঁর প্রয়াণের পর কি হল তাঁর সংগ্রহের বিপুল পরিমাণ সোনার? সম্প্রতি সেই কথা জানালেন ছেলে বাপ্পা লাহিড়ী (Bappa Lahiri)।
নিজের দীর্ঘ সংগীত কেরিয়ারের জীবনে একাধিক কালজয়ী গানের সৃষ্টি করে গিয়েছেন বাপ্পি লাহিড়ী। তবে গানের পাশাপাশি সোনা ছিল খুবই প্রিয়। না সম্পত্তির পরিমাণ বাড়াতে বা ফ্যাশনের জন্য নয় সোনা ভাগব্যান হওয়ার লক্ষণ বলে মনে করতেন। তাছাড়া সোনা খুবই প্রিয় ছিল বাবার এমনটাই জানান বাপ্পি লাহিড়ীর ছেলে বাপ্পা লাহিড়ী।
ছেলে বাপ্পার মতে, সোনার প্রতি আকর্ষণ থেকে গোটা বিশ্ব ঘুরেছেন বাপ্পি লাহিড়ী। ভারত তো বটেই হলিউড থেকে ভ্যাটিকান সিটিও গিয়েছেন তিনি। সেখান থেকে নিয়ে এসেছেন সোনা। যে গয়না পছন্দ হত সেটাকেই সোনা দিয়ে তৈরী করে নিতেন। বাপ্পা জানান, ‘সোনার সাথে বাবার একটা আধ্যাত্মিক যোগ ছিল। কখনোই সোনা ছাড়া বাইরে বেরোতেন না কোথাও যেতেন না। ভোর ৫টার সময় ফ্লাইট থাকলেও গায়ের সমস্ত সোনা পরে তবেই বেরোতেন’।
সত্যি বলতে সোনা কারা বাপ্পি লাহিড়ী যেন অসম্পূর্ণ মনে হয়। এই কথা গায়ক নিজেও বহুবার বলেছেন। বহু সাক্ষাৎকারে ও শোয়ের মঞ্চে নিজের সোনার প্রতি ভালোবাসার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সারা জীবনের পরিশ্রমে সংগ্রহ করা এই বিপুল পরিমাণ সোনা আজ পরেই রইল ইহজগতে। নিজের বিপুল পরিমাণ স্বর্নভান্ডার রেখেই সুরের জগতে পাড়ি দিয়েছেন বাপ্পি লাহিড়ী।
তাহলে কি হবে বাপ্পি লাহিড়ীর সেই বিশাল পরিমাণ সোনার? সম্প্রতি ছেলে বাপ্পা এই বিষয়ে জানিয়েছেন,’বাবা রসাহতে সোনার একটা আধ্যাত্মিক ও আত্মার যে যোগ ছিল। তাই আমরা ওই সোনার গয়নাগুলোকে সংরক্ষণ করব। ওগুলোই ছিল বাবার সবচাইতে প্রিয় জিনিস। তাই আমরা চাই মানুষ সেগুলোকে দেখার সুযোগ পাক। এই জনই ওই গয়নাগুলোকে মিউজিয়ামে দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে’।
তবে শুধুই সোনার গয়না নয়, বাপ্পি লাহিড়ীর আরও জিনিসপত্র মিউজিয়ামে দেওয়া হবে। জানা যাচ্ছে, জুতো, সানগ্লাস থেকে টুপি থাকবে এই সংগ্রহে। এছাড়া সোনা ছাড়াও ঘড়ি সংগ্রহ করার খুব শখ ছিল বাপ্পি লাহিড়ীর। সেই ঘড়ির সংগ্রহও থাকবে মিউজিয়ামে।