নিষিদ্ধ পল্লীর বাসিন্দা মানেই সমাজের তথা তথাকথিত ভদ্র সমাজের কলঙ্ক। মুখে সবাই যতই বলুক না কেন আজকের দিনেও পতিতালয়ের বাসিন্দাদের জন্য ছিটেফোঁটাও সম্মান নজরে পড়ে না এই দেখনদারির দুনিয়ায়। সম্প্রতি পেশায় যৌনকর্মী মুম্বাইয়ের মাফিয়া ক্যুইন গাঙ্গুবাইয়ের জীবনী অবলম্বনে তৈরি সিনেমায় অভিনয় করে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছেন বলিউড অভিনেত্রী আলিয়া ভাট।
সঞ্জয় লীলা বনশালি পরিচালিত বহু প্রতীক্ষিত এই ‘গাঙ্গুবাই কাথিয়াওয়াড়ি’ সিনেমায় আলিয়ার অভিনয়ের দাপট দেখে মুগ্ধ চোখে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছা। কি অভিনয়, কি এক্সপ্রেশন, কি সংলাপ সবদিক দিয়ে একেবারে নিঁখুত আলিয়া। তার মধ্যে দিয়েই এই অন্ধকার জীবনে তলিয়ে যাওয়া অসংখ্য মানুষের মিল খুঁজে পেয়েছেন দর্শক।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে পেশায় যৌনকর্মী এমনই মায়ের সাংবাদিক ছেলের পোস্ট। গোটা গাঙ্গুবাই ছবিতে পর্দার আলিয়া ভাটকে দেখে নস্টালজিয়ায় ডুবে গিয়েছিলেন পেশায় সাংবাদিক তথা লেখক মনীশ গায়কোয়াড়। তবে মায়ের পেশা নিয়ে কোনো লজ্জা নেই ছেলের, বরং সমাজের প্রচলিত সমস্ত ট্যাবু ভেঙে সম্মান জানিয়ে কুর্নিশ করেছেন মায়ের লড়াইকে।
পর্দার গাঙ্গুবাইয়ের সাথে মায়ের মিল খুঁজে পেতেই,দুজনের ছবি মিলিয়ে কোলাজ করে মনীশ লিখেছেন ‘ পর্দার গঙ্গুবাই অবিকল যেন মা। ডানদিকে যার ছবি দেখা যাচ্ছে তিনি আমার মা রেখাবাই। সাদা শাড়ি, লাল টিপ, হাতে চুড়ি, কোমরে শাড়ির আঁচল গোঁজা। ১৯৮০ সালের কামাঠিপুরা কোঠা বাড়িতে নাচ করছে। ভাগ্য তাদের মিলিয়ে দিয়েছে।’
জানা যায় মুম্বইয়ের এক তথাকথিত কোঠা বাড়িতে বড় হয়ে ওঠা মনীশের। তাঁর মা সেই নিষিদ্ধপল্লিরই বাসিন্দা। গাঙ্গুর মতো মনীশের মায়ের জীবনেও নেমে এসেছিল ট্র্যাজেডি। তার পর হাত বদল হয়েছে বহুবার। কখনও মুম্বইয়ের কংগ্রেস হাউস, কখনও কলকাতার নিষিদ্ধপল্লি- বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছেন তিনি। মনীশ জানান, দারুণ নাচতে পারতেন তাঁর মা। এমনকি ভাল গজল-ও গাইতেন তিনি। তাই পর্দায় গাঙ্গুবাই কাঠিয়াওয়ারি দেখে মায়ের কথাই বারবার মনে পড়েছে তাঁর।