একে একে বিনোদন জগতে দুঃখের কালো মেঘ যেন ভোরে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন স্বর্ণযুগের শেষ শিল্পী তথা গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় (Sandhya Mukherjee)। বিগত ১৫ই ফেব্রুয়ারি না ফেরার দেশে চলে গেলেন তিনি। তাঁর প্রয়ানে স্বাভাবিকভাবেই শোকাহত গোটা মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি থেকে শুরু করে গান প্রিয় শ্রোতারা ও টেলিভিশন জগৎ। কিংবদন্তি অভিনেত্রী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ও (Sabitri Chatterjee) ভীষণ ভারাক্রান্ত সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে।
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে চোখে জল চলে এসেছে অভিনেত্রীর। তিনি বলেন, ‘কি আর বলবো মন তো ভারাক্রান্ত। গলার আওয়াজ যেন আটক যাচ্ছে’। বোঝাই যাচ্ছে এমন একজন শিল্পীকে হারিয়ে মনের অবস্থা খুবই খারাপ। কারণ একসময় একত্রে অনেক কাজ করেছেন সন্ধ্যা-সাবিত্রী।
সুদূর আমেরিকাতেও একত্রে শো করতে গিয়েছিলেন দুজনে। সেখানে প্রবাসী বাঙালিদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এক নাটক। যেখানে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের গান শুনে আবেগঘন হয়ে পড়েছিলেন প্রবাসী বাঙালিরা। অভিনেত্রীর মতে, ‘আমাকে ভীষণ ভালোবাসতেন সন্ধ্যা দি। কয়েকমাস আগেই ওর বাড়ি যাওয়ার কথা হল। কিন্তু আর যাওয়া হল না। হারিয়ে গেলেন বাংলার সুর সম্রাজ্ঞী সন্ধ্যাদি।
এটুকু বলতে গিয়েই দীর্ঘশ্বাস ফেলেন অভিনেত্রী। এরপর তিনি বলেন, ‘ওর গাওয়া কতশত গানে যে আমার অস্তিত্ব ছিল সেটা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। এইতো কদিন আগেই লতাজি প্রয়াত হলেন। আর এখন সন্ধ্যা দি!’ তাঁর প্রয়ানে একপ্রকার ভারসাম্য হারিয়ে গিয়েছে সংগীত জগতের।
অভিনেত্রী জানান, ‘সন্ধ্যাদী সর্বদাই বলতেন গলা ঢেকে রাখার জন্য। কারণ শিল্পী হিসাবে গলাটাই সবচাইতে জরুরি। তাই সর্বদাই গলায় মাফলার মত রাখতেন। তাকে মাফলার ছাড়া দেখা যেত না। এমনকি আমাকেও বলতো সাবিত্রী অন্তত শাড়ির আঁচল দিয়ে গলাটা ঢেকে রাখ। এমন অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে তাকে জড়িয়ে’।
প্রসঙ্গত, মৃত্যুর আগে ১৯ দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন সন্ধ্যাম মুখোপাধ্যায়। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করার খবর প্রকাশ্যে আসতেই এক প্রকার চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল সংগীতমহল থেকে শ্রোতারা। এরপর বিগত মঙ্গলবারেই জানানো হয় সংকটজনক অবস্থায় রয়েছেন তিনি। শেষে বুধবার সন্ধ্যায় ৯০ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন গীতশ্রী গায়িকা।