ছোট বেলায় কার্টুন (Cartoon) তো সকলেই দেখেছে। ছোট বেলায় দেখা কার্টুনের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় একটি কার্টুন হল ‘মোগলি দা জঙ্গলে বয়’ (Mowgli the jungle boy)। খুব ছোট্ট বয়সে জঙ্গলে মা বাবার থেকে আলাদা হয়ে পড়া একটা ছোট্ট ছেলে। যে কিনা বনের মধ্যেই বন্য ও হিংস্র প্রাণীদের মধ্যেই বড় হয়ে ওঠে। সে যায় হোক গল্প তো গল্পই হয়, তা আবার সত্যি হয় নাকি! কিন্তু এবার এই কার্টুনের গল্পের মতোই এক মোগলির খোঁজ পাওয়া গেল বাস্তব জীবনে।
সুদূর জাকার্তায় (Jakarta) খোঁজ মিলেছে এই গল্পের মোগলির। গল্পের মোগলির মতোই বনে থাকে সে। বন্য ও হিংস্র প্রাণীদের সাথে রয়েছে বন্ধুত্ব। বনের থেকেই নানান ফল মূল, ঘাস পাতা, কলা ইত্যাদি খেয়ে দিন কাটায় সে। মানুষ বলতে চেনে শুধু মা আর বাবাকে। নিজের মা বাবা ছাড়া অন্য কোনো মানুষকে দেখলেই এক দৌড়ে পালায় জঙ্গলে। বর্তমানে ২১ বছর বয়স এই গল্পের মোগলির, মা বাবার দেওয়া নাম হল এলি।
আসলে ছোট বেলা থেকেই এক বিরল রোজে আক্রান্ত এলি। যার ফলে মানব সভ্যতার থেকে দূরে বনে জঙ্গলে পশুদের মাঝেই বড় হয়েছে এলি। একেবারে রুডইয়ার্ড কিপলিংয়ের গল্পের সেই মোগলির মত। দীর্ঘ সময় জঙ্গলে থাকায় স্বভাবও বদলে গেছে, ঠিক যেন কার্টুনের মোগলির মত স্বভাব তার। কোনো মানুষ পছন্দ করে না এলি।
এলির মা বাবার মতে, এলি হল তাদের ষষ্ঠ সন্তান। এর আগেও পাঁচবার গর্ভবতী হয়েছিলেন এলির মা কিন্তু আগের ৫ সন্তানই জন্মের পর মুহূর্তে মারা যায়। যদিও বা এলি বেঁচে যায়, সে মানুষদের থেকে একেবারে আলাদা হয়ে পরে এক বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে। এখনো পর্যন্ত কথা বলতে পারে না এলি, পারে শুধু দৌড়াতে। সারাদিন বনে জঙ্গলে দৌড়ে বেড়ায় আর কলা খায়।
এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার দরুণ জঙ্গলে পশুপাখিদের সাথেই থাকত সে , মানুষ দেখলেই পালাত দূরে। এই কারনে সকলেই তাকে বাঁদর বলেও ডাকত। অদ্ভুত দর্শন এলিকে দেখে সকলে ঢিল ছুঁড়তো। মানুষ হলেও তার উপর পশু ভেবে করা হত অত্যাচার। তাদের এই দুর্দশা দেখে শেষ মেস তাদের দিকে এগিয়ে আসে ,আফ্রিম্যাক্স নামের একটি চ্যানেল। বিবৃতি দিয়ে জানান , ‘ এই একলা মা ও সন্তানকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসুন , এদের কোনও উপার্জন না থাকায় তারা খাদ্যের অভাবে ভুগছে , ঘাস খেয়ে থাকে ,আসুন ওদের জীবন বাঁচাই ‘.
এই বিজ্ঞাপন দেখে বহু মানুষ পরিবারটির পাশে গিয়ে দাঁড়ায় , ইতিমধ্যেই তার জন্য প্রায় ৪ ডলার অনুদান জমা পড়েছে। তাকে যাতে স্কুলে পাঠিয়ে পঠন পাঠন করানো হয় সেই জন্যেও চেষ্টা করে নেটিজেনরা , আজ সে স্কুলেও যায়। সকলের চেষ্টায় আস্তে আস্তে সাধারণ জীবনে ফিরছেন এলি। আর পাতা নয় স্কুলের ইউনিফর্ম পরে প্রসূন করতে যান তিনি।