হিন্দু ধর্ম মতে গোরুকে গোমাতা হিসেবে পুজো করা হয় তা আমরা সকলেই জানি। গোরুর দুধ মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের জন্য কতটা অনিবার্য এবং দরকারি তা আর আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখেনা। অবলা এই প্রাণী ব্যবহার করে কত মানুষ হাজার হাজার টাকা আয় করেন৷ তাদের গোয়াল ঘরে বেঁধে রেখে নিজস্ব প্রয়োজন মেটান তারা৷ গোরুর দুধ ছাড়া ডেয়ারি শিল্প ধ্বসে যাবে, তাই আমাদের দেশে গোরু প্রতিপালনের এত হিড়িক।
কিন্তু আজ সম্পূর্ণ এক অন্য কথা বলব। যেখানে গোরুকে কেবল প্রয়োজন মেটাতে ব্যবহার করা হয়, সেই গোরুকে রাজার হালে যত্নে রাখেন এক মহিলা। গোয়ালঘর নয় গোরুর জন্য আলাদা বেডরুম বানিয়ে দিয়েছেন রাজস্থানের যোধপুরের সুভাষ নগরের বাসীন্দা প্রেম সিং কাচওয়াহ এবং তার স্ত্রী সঞ্জু কানওয়া৷ ওই মহিলা গোরুদের সন্তানস্নেহে লালন করেন।
পরিবারের সদস্য হিসেবে গরু, ষাঁড় ও বাছুর পালন করেন তিনি। তবে গোরু তার কাছে কোনোও পশু নয় বরং পরিবারেরই একজন সদস্য। তাদের জন্য বানানো রয়েছে আলাদা বেডরুম, তাতে নরম গদির উপর চাদর পাতা। রয়েছে দামী মোটা কম্বলও। সঞ্জু কানওয়ারের এই পরিবার এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় বিখ্যাত। ইনস্টাগ্রামে এই পরিবারের একটি পেজও রয়েছে।
ওই পরিবারে গোরু বাছুর মিলিয়ে রয়েছেন তিনজন গৃহপালিত পোষ্য। তাদের নাম দেওয়া হয়েছে গোপী, গঙ্গা এবং পৃথু। সঞ্জু কানওয়ার জানান, সকালে সে তার বাছুরকে দুধ খাওয়ায় এবং স্নান করিয়ে দেয়, এরপর গা শুকোলেই বাছুর নিজের বিছানায় গিয়ে টানটান হয়ে শুয়ে টানা ২ ঘন্টা বিশ্রাম নেয়।
এমনকি তাদের জন্য রয়েছে আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থাও। মানুষের মতোই বেডরুমে থাকে তারা, শৌচকর্ম করতে নিজেরাই যায় বাথরুমে। এইভাবে গোরু প্রতিপালন করতে করতে ওই দম্পতির বাড়ির নামই হয়ে গিয়েছে গোরুর বাড়ি। ওই পরিবারের কর্ত্রী এক দশক ধরে নিজের সন্তানের মতো গোরু প্রতিপালন করে আসছেন, তাঁর মতে ” আমরা মন্দিরে শিবের বাহন নন্দীর পূজা করে থাকি। রাস্তায় ষাঁড় বা গরু অসুস্থ অবস্থায় পড়ে থাকলে মুখ ফিরিয়েনি বা অবহেলা করি। গরু এমন এক গৃহপালিত প্রাণী যে কারোর ক্ষতি করে না বরং মানুষের অনেক উপকার করে থাকে। তাই আমি তাদের বাড়িতে ভগবানের মতো সেবা করে থাকি।”