‘নো প্যানিক, অনলি টনিক’ গত কয়েকদিন ধরে বাঙালির মুখে মুখে ঘুরছে এই চারটি শব্দ। যেন অদ্ভুত একটা স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে এই ডায়লগ বলে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে গত ২৪ শে অক্টোবর মুক্তি পেয়েছে দেব (Dev) এবং পরান বন্দোপাধ্যায় (Paran Bandopadhyay) এর টনিক (Tonic)। এই ছবির ট্রেলার রিলিজ হওয়ার পর থেকেই দর্শকদের মধ্যে প্রবল উৎসাহ তৈরি হয়েছিল।সম্পূর্ণ অন্য ধাঁচের এই ছবিতে ফুটে উঠেছে দুই জেনারেশনের অসম্ভব সুন্দর রসায়ন। ছবিতে ৮০ ঊর্ধ্ব পরানের সাথে পর্দা মাতিয়েছেন অভিনেতা দেব।
আমরা সকলেই জানি করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউ দেশের বুকে আছড়ে পড়তেই দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল সিনেমা হল গুলি। এই পরিস্থিতিতে প্রবলভাবে ধাক্কা খেয়েছিল টলিউড ইন্ডাস্ট্রি। তবে গত ২৪ শে ডিসেম্বর ‘টনিক’ মুক্তি পেতেই হল উপচে পড়েছে দর্শকে। ছবি মুক্তি পাওয়ার পর সমস্ত হলই হাউজফুল হয়েছে। পরপর দুই সপ্তাহ এই ছবি চুটিয়ে ব্যবসা করেছে।
ঘ্যানঘ্যানে প্রেম, বিচ্ছেদ, থ্রিলার, রহস্য থেকে সম্পূর্ণ অন্য ধরণের এই ছবির গল্প৷ ছবিতে নেই কোনোও নায়িকা। নায়ক একজন দেব হলে অন্যজন পরান বন্দোপাধ্যায়। করোনার পর চলতি বছরেই মুক্তি পেয়েছে দেবের ছবি গোলন্দাজ। কিন্তু এই ছবি হিট হয়নি বললে ভুল হবে, কিন্তু সেভাবে দেবকে পাননি দর্শকেরা তার ছাপ ও স্পষ্ট ছিল বক্স অফিসে।
কিন্তু বুড়ো হাড়ের জোর দেখিয়ে দেবের সাথে অভিনয় করতেই টনিক সুপার ডুপার হিট বক্স অফিসে। বলা যায়, এই ছবিই অনেক দিন পর টলিউডের কোনোও ছবি বক্স অফিসে তুমুল সাড়া ফেলে দিয়েছে। করোনার পর থেকে বলিউড এবং দক্ষিণের একাধিক ছবি দারুণ ফলাফল করলেও বাংলার কোনোও ছবিই সেভাবে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি।
তবে এবার করোনার খড়া কাটিয়ে সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে টনিক। প্রতিটা হলে হলেই প্রায় হাউস ফুল হচ্ছে টনিক। টনিকের অন্যতম জনপ্রিয় ডায়লগ ‘নো প্যানিক অনলি টনিক’ এখন সকলের মুখে মুখে ঘুরছে। প্রসঙ্গত, টনিকের জন্য জান প্রাণ উজার করে দিয়েছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা। সাইকেল চালিয়েছেন তিনি ৫ দশক পর, কোনোও স্টান্ট ম্যানের সাহায্য ছাড়াই করেছেন রিভার র্যাফ্টিং।
গল্পে পরাণ বন্দোপাধ্যায়ের চরিত্রের নাম জলধর। ছবিতে তার স্ত্রীয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন শকুন্তলা বড়ুয়া। ছেলে বউমার কাছে বোঝা হয়ে যাওয়া এক বৃদ্ধ দম্পতিকে নতুন করে পৃথিবী দেখাবেন দেব ওরফে টনিক। এই ছবি দেখে যে ৮ থেকে ৮০ -ই মন ভালো হবে তা বলাই বাহুল্য।
হয়ত এই ছবি পুরোনো সব রেকর্ড ও ভেঙে দিত। কিন্তু গোদের উপর বিষ ফোঁড়ার ফের মাথা চাড়া দিয়েছে করোনার তৃতীয় ঢেউ আর তার জেরেই রাজ্যসরকার নির্দেশিকা জারি করে হল ৫০ শতাংশ দর্শক নিয়ে খোলা যাবে। তাই টনিকের ব্যবসা শেষ কদিনে কিছুটা হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু একথা একেবারে স্বীকার করে নিতেই হয় যে এরপরেও বাংলা সিনেমার দর্শকদের হলমুখী করেছে দেবের এই ছবি।
এই প্রসঙ্গে দেব বলেছিলেন, এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ‘টনিক’ মনে রাখার মতো ছবি হয়ে থাকল। অবশেষে বাংলার মানুষকে সিনেমা হলে ফেরাতে পারলাম। এরপরই গোটা টিমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন দেব। এই ছবির মাধ্যমে গ্রাম এবং শহরের দর্শকদের এক সুতোয় বাঁধতে পেরেছেন দেব।