হিন্দুদের প্রচলিত বিয়ের রীতি অনুযায়ী একটা পুরুষেরই দায়িত্ব থাকে সংসার টেনে নিয়ে যাওয়ার। তাই মহাসমারোহে অনুষ্ঠান করে ‘বৌভাত’ দেওয়া হয়। যেখানে বর বউয়ের হাতে থালা সাজানো ভাত, আর কাপড় তুলে দিয়ে বলে, “আজ থেকে তোমার ভাত কাপড়ের দায়িত্ব নিলাম”। যেন কোথাও লেখা আছে ছেলেরা উপার্জন করবে, তারপর বিয়ে করবে। মেয়ের বাবাও ছেলের পকেট কতটা ভারী তা দেখেই মেয়েকে তার হাতে তুলে দেয়। আর একটা মেয়েকে সারাজীবন স্বামীর মুখাপেক্ষী হয়েই কাটিয়ে দিতে হয়।
মানুষের জীবনের অঙ্গ হয়ে ওঠে সিরিয়াল। পর্দায় দেখানো অনেক ছবিই তাদের জীবনের সাথে মিলে যায়। সারাদিনের ক্লান্তি সেরে তাই টিভির সামনে বসেন মা কাকিমারা, অবশ্যই অনেক কাকু জেঠুরাও একই ভাবে সিরিয়ালের ভক্ত। ইতিমধ্যেই সকলের নজর কেড়েছে স্টার জলসার নতুন ধারাবাহিক ‘খুকুমণি হোম ডেলিভারি ‘।
সম্পূর্ণ অন্য ধাঁচের গল্প নিয়ে তৈরি এই ধারাবাহিক ইতিমধ্যেই TRP তালিকায় বেশ জায়গা করে নিয়েছে। আজকালকার ব্যস্ত জীবনে নানান ফুড ডেলিভারি অ্যাপ এবং হোমডেলিভারির গুরুত্ব অপরিসীম। কত মানুষ দুবেলা দুমুঠো ভাত খেয়ে বেঁচেই আছে এই হোম ডেলিভারি, বা অর্ডার করা খাবারের ওপর নির্ভর করে। গল্পের নায়িকা সেরকমই একজন ডেলিভারি গার্ল, যে বাড়ি বাড়ি হাতে রান্না করা রান্না পৌঁছে দেয়। আর “সাথে স্নেহ, মায়া, মমতা ফ্রি। ”
কিন্তু গল্পের নায়ক মোটেই নায়ক সুলভ নয়। অর্থাৎ নায়ক বলতে আমরা যা বুঝি উঁচু, লম্বা, স্বাস্থ্যবান, কর্মঠ এমন কোনোও গুণই পরিচালক বিহানের মধ্যে দেখাননি। বরং সে অকর্মণ্য, সে মানসিক ভাবে অসুস্থ। হোম ডেলিভারির খাবার দিতে গিয়েই তার সাথে পরিচয় হয় খুকুমণির। খুকুমণি তাকে রাজপুত্রের বলে ডাকে। এই মানসিক ভাবে অসুস্থ ছেলেটা একমাত্র ভরসা করে খুকুমণিকেই। তাই চক্রান্ত করে তাকে অন্য মেয়ের সাথে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও বিহান খুকুমণিকেই সিঁদুর পরিয়ে দিয়ে বলে ‘ তুমি আমার বৌ তোমার ছুটি নেই।’
সিরিয়ালের নতুন প্রোমোতে দেখা যাচ্ছে, বিয়ের পর বৌভাতের অনুষ্ঠান নিয়ে চিন্তিত সকলে। বিহান কীভাবে ভাত কাপড়ের দায়িত্ব নেবে। নতুন প্রোমোতে দেখা যায়, এই সময় এগিয়ে আসে খুকুমণি, সে জানায় ভাত কাপড় হবে। এই বলে ভাত কাপড়ের থালা হাতে তুলে নিয়ে সে বিহানকে জানায়, “রাজপুত্তুর আজ থেকে আমি তোমার ভাত কাপড়ের দায়িত্ব নিলাম”।