কথায় আছে, “যদি থাকে সুজন তেঁতুল পাতায় ন’জন”, আর সেখানে ভালোবাসা থাকলে একটি ম্যানহোলকে বাড়ি বানিয়ে নেওয়াও যে দুঃসাধ্য নয় তা প্রমাণ করে ছাড়লেন ‘কলম্বিয়ার এক দম্পতি’। প্রায় ২২ বছর ম্যানহোলের মধ্যেই জমিয়ে সংসার করছেন এক দম্পতি, আর এতকিছুর পরেও তাদের জীবন নিয়ে নেই কোনোও অভিযোগ। আসলে কিছু মানুষের অনেক থাকা সত্ত্বেও সুখী হয়না, আর কেউ কেউ অল্পেই খুব খুশি।
সূত্রের খবর, কলম্বিয়ার মেডেলিনের রাস্তায় সাড়ে চার ফুট বাই ১০ ফুটের একটি ম্যানহোল। এর গভীরতা সাড়ে ছয় ফুট। ম্যানহোলের ঢাকনাটা সারা বছরই থাকে খোলা। গত ২২ বছর ধরেই নর্দমার এই ম্যানহোলে বাস করে আসছেন মারিয়া গার্সিয়া ও তাঁর স্বামী মিগুয়েল রেস্ট্রেপো। পথচারীরাও জানেন যে ওই ম্যানহোলই মারিয়া এবং মিগুয়েলের বাড়ি।
কলম্বিয়ার মারিয়া গার্সিয়া এবং মিগুয়েল রেস্টরেপো কলম্বিয়ার এমন একটি অঞ্চলে নিজেদের যৌবন কাটিয়েছেন যেখানে দুর্নীতি এবং ড্রাগ গ্রাস করেছে বহু মানুষের জীবন৷ কিন্তু এমন এক অশান্তি লক্ষ্যহীন জীবনে যখন মারিয়া এবং মিগুয়েলের দেখা হয়, তখন দু’জনই ড্রাগের নেশায় বুঁদ৷ কিন্তু ওই যে বলে না, ভালবাসার একটা জোর আছে৷ সেই ক্ষমতা অনেক অন্ধকার ঘুচিয়ে দেয় নিমেষে৷ পরস্পরের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর মাদকের নেশা কাটিয়ে ওঠেন এই দম্পতি৷ নিজেদের নতুন আস্তানা গড়ে নেন ম্যানহোলের ভিতরে৷
ওই ম্যানহোলে মোটামুটি ভালোভাবে থাকার ব্যবস্থা করে নিয়েছেন মারিয়া-মিগুয়েল। জায়গা অনেক ছোট হলেও খুব প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রে বেশ আরাম-আয়েশেই আছেন তাঁরা। সেখানেই এই দম্পতির বিদ্যুৎ, টিভি, এমনকি ছোট্ট একটি রান্নাঘরও রয়েছে। উৎসব ও ছুটির দিনগুলোতে সুন্দর করে ঘরও সাজান তাঁরা।
ওই ম্যানহোলেই তাঁদের সঙ্গেই থাকে পরিবারের আরও এক সদস্য—‘ব্ল্যাকি’ নামের পোষা এক কুকুর। মারিয়া বা মিগুয়েল কেউ না থাকলে ঘর পাহারা দেয় ‘ব্ল্যাকি’। এ ভাবেই বাকি জীবনটাও কাটিয়ে দিতে চান এই সুখী দম্পতি।