দীর্ঘ দুই দশক টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য (Aparajita adhya)। বয়স যেন তার কাছে কেবলমাত্র একটি সংখ্যা। সর্বদাই একরাশ হাসি নিয়ে দেখতে পাওয়া যায় অভিনেত্রীকে। আজ একজন সফল অভিনেত্রী হলেওতাঁর জীবনেরসংগ্রামের কথা খুব কম লোকেই জানেন। সম্প্রতি নিজের জীবনের সংগ্রামের কথা সকলের সাথে শেয়ার করে নিলেন অভিনেত্রী।
মূলত সমাজে নারীদের অবস্থানের কথা বলতে গিয়েই অভিনেত্রী নিজের জীবনের গল্প শেয়ার করেছেন। অভিনেত্রী জানান তার মা ও দিদিমা সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে আজ তাকে একজন স্বাধীন নারী হয়ে উঠতে সাহায্য করেছেন। মা দিদিমাদের কথা এদিন সকলের সামনে তুলে ধরেছেন অভিনেত্রী। তিনি জানান, দিদিমা ছিলেন মাস্টারদা সূর্য সেনের ছাত্রী। খুলে অল্প বয়সেই বিয়ে হয়ে গিয়েছিল দিদিমার।
বিয়ের পর অল্প বয়সেই কলকাতায় চলে আসেন স্বামীর সাথে। দিদিমার স্বামী ছিলেন অত্যাচারী, একসময় দ্বিতীয় বিবাহ করেন তিনি। তখন দুই মেয়েকে নিয়ে বাড়িতেই ফিরে আসেন তিনি। মামার বাড়িতে আটজন ভাইবোনের মধ্যে মানুষ হয়েছিলেন অভিনেত্রী। এরপর স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি শুরু করতে করতেই দুই মেয়েকে উচ্চশিক্ষিত করে মানুষ করেন। অকথ্য অত্যাচারের মধ্যেই বড় হয়েছিলেন দুজন। বাসোনমাজা থেকে কাপড় কাচা সবই করতে হত টুবুই অভিনেত্রীর মা পলিটিক্যাল সাইন্সে এমএ ও অভিনেত্রীর মাসি ইংলিশে ডাবল এমএ করেন।
অপরাজিতা আঢ্য জানান, নকশাল আন্দোলনের সাক্ষী ছিলেন তার মা। চোখের সামনে একজনকে খুন হতে পর্যন্ত দেখেছিলেন অভিনেত্রীর মা। এমনকি তাঁর বাবাও ছিলেন সাথে আর সেই দৃশ্য দেখে সারাজীবনের জন্য নার্ভের রুগী হয়ে পড়েন তিনি। বাবা স্থায়ীভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লেও মা ভেঙে পড়েননি, মোজের জোরে সংগ্রাম করে এগিয়ে গিয়েছেন জীবনযুদ্ধে। স্কুলের চাকরি বজায় রেখেছিলেন মা, বাবার কাছেই মানুষ হয়েছিলেন অভিনেত্রী।
বাবার ভালোবাসা ও মায়ের করা শাসনের মধ্যে দিয়েই মানুষ হন অভিনেত্রী। এরপর ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠে একসময় অভিনয়ে আসা। আর বর্তমানে তাকে আমরা সকলেই চিনি। অভিনেত্রীর জীবনের এই সংগ্রামের কথার ভিডিও ইতিমধ্যেই ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতে।