করোনা অতিমারীর সময়কালে লকডাউনে স্তব্ধ ছিল সমস্ত ক্ষেত্র। দীর্ঘদিন শ্যুটিং বন্ধ ছিল বলিপাড়ায়। আর সেই সুযোগেই দূরদর্শনে পুনরায় সম্প্রচারিত হয় বিখ্যাত ‘মহাভারত’। মহাভারতে দ্রৌপদী-র ভূমিকায় অভিনয় করে বিখ্যাত হয়ে যান রুপা গাঙ্গুলী। টলিউডের সেই রুপার বয়সই বর্তমানে ৫৫, আজ ২৫শে নভেম্বর তাঁর জন্মদিন। এই শুভদিনে সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠে এসেছিল একটি পুরনো ঘটনা। মহাভারতের শ্যুটিং চলাকালীন কেন ভেঙে পড়েছিলেন রুপা। উত্তর মেলে সোশ্যাল মিডিয়াতেই।
বিআর চোপড়ার ‘মহাভারত’ ভারতীয়দের মনে আজও বিদ্যমান থাকার কারণ একটাই, অত্যন্ত শক্তিশালী অভিনয়। পরিচালক নিজে একটি দৃশ্য নিয়ে অত্যন্ত খুঁতখুঁতে ছিলেন, সেটি হল দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের দৃশ্যটি। রি দৃশ্যায়নের আগে বহুল প্রস্তুতি চলে। বিআর চোপড়া বিশেষভাবে অর্ডার দিয়ে প্রায় ২৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি শাড়ি প্ৰস্তুত করান।
উক্ত দৃশ্যে অভিনয়ের আগে রুপার সঙ্গে বিশেষভাবে বৈঠক সারেন পরিচালক-প্রযোজক। আর তাতেই সম্পূর্ণরূপে চরিত্রের সঙ্গে একাত্ম হয়ে পড়েন রুপা। জানা যায়, অভিনয়ের সময় ভীষণভাবে ভেঙে পড়েন রুপা। দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের বিষয়টি যে কতটা নির্মম ও একজনের কাছে কতটা লজ্জার, তা উপলব্ধি করে অভিনয়ের সময়ে সত্যিই কাঁদতে থাকেন অভিনেত্রী। আর এই কারণেই এই দৃশ্যটি এতটা বাস্তব ও জ্বলন্ত। যদিও এরপর প্রায় একঘন্টা ধরে সেটের সকলে মিলে রূপাকে কান্না থেকে বিরত করেন!
১৯৮৮-এর ২রা অক্টোবর বিআর চোপড়া ও তাঁর ছেলে রবি চোপড়ার যৌথ পরিচালনায় শুরু হয় ‘মহাভারত’। সারা ভারতের জনমানসে এই ধারাবাহিক যে এতটা সারা জাগায়, তার কারণ চরিত্রগুলির বাস্তবায়ন ও দৃঢ় অভিনয়। প্রথমে দ্রৌপদী-র চরিত্রের জন্য জুহি চাওলাকে বেছে নেওয়া হলেও তিনি তখন আমির খানের সঙ্গে ‘কায়ামত সে কায়ামত তাক’-এর শ্যুটিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন, ফলে দ্রৌপদী-র চরিত্রের জন্য কাস্টিং করা হয় রুপা গাঙ্গুলীকে।
টলিপাড়ার পরিচিত অভিনেত্রী রুপা গাঙ্গুলী তাঁর অভিনয় জীবন শুরু করেন ‘মুক্তবন্ধ’ নামক বাংলা ধারাবাহিকে। হিন্দি পর্দায় তাঁর প্রথম কাজ দূরদর্শনের ‘গণদেবতা’ ধারাবাহিক। মহাভারত-খ্যাত অভিনেত্রী হিসেবে এরপর পরিচিতি পান রুপা। একের পর এক অভিনয় করেন গৌতম ঘোষের ‘পদ্মা নদীর মাঝি’, অপর্ণা সেনের ‘যুগান্ত’ ও ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘অন্তরমহল’ ছবিতে।